মো.আলাউদ্দীন, হাটহাজারীঃ চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে টানা কয়েক দিন বৃষ্টি ও ভারি বর্ষণের ফলে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে।
এতে দুই লক্ষাধীক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে জন দুর্ভোগে চরম আকার ধারন করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পূর্ব মেখল খোয়াজ চৌধুরী বাড়ি সামনে থেকে মেখল মাদ্রাসা রোড়টি পানির নিচে ডুবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
যার কারনে সদর থেকে ওই সড়ক হয়ে দক্ষিণ মেখল, গড়দুয়ার, পুর্ব মেখল বাদামতল, কামদরআলী হাট সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণের চলাচল মারাত্নকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ড.শহীদুল্লাহ একাডেমি, মোহাম্মদপুর, ছিপাতলী, গুমাণমর্দ্দন, নাঙ্গলমোড়ার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে।
পৌরসভার মুন্দরীছড়ার ভাঁঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে পাহাড়ী ঢলের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে ৮ নং ওয়ার্ডের মিরেরখীল গ্রাম ও মীর রোড প্লাবিত হয়ে এলাকার বিভিন্ন বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
এছাড়া কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির ফলে উপজেলার ফরহাদাবাদ,ধলই, মির্জাপুর, ছিপাতলী, নাঙ্গলমোড়া, গুমানমর্দ্দন, গড়দুয়ারা, উত্তর ও দক্ষিণ মাদার্শা, শিকারপুর, বুড়িশ্চর ও হাটহাজারী পৌরসভার কিছু কিছু এলাকা বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় বাড়িঘর ও যাতায়তে সড়কের উপর পানি থাকায় দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষজন বিপাকে পড়েছেন।বন্যার পানিতে আমান ধান, মৎস্য খামার-পুকুর তলিয়ে গেছে।
পৌরসদরের কামালপাড়া সড়কের মাথায় দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে হাটহাজারী সরকারি কলেজের ৭/৮ জন শিক্ষার্থীদের বন্যা কবলিত মানুষদের সাহায্যার্থে চাঁদা তুলতে দেখা গেছে। বেলা দৃইটার দিকে পৌরসদরের ব্যস্ততম কাচারি সড়ক প্রায় লোকজন শুন্য দেখা যায়।
উপজেলার ১২ নং চিকনদন্ডী ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃঞ্চ নাথ জানান, প্রবল বর্ষনে ফতেয়াবাদ সত্যানন্দ মঠ তথা সাধুর পাহাড়ের মন্দিরে ধস দেখা দিয়েছে। এতে মন্দিরটি ধসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
মির্জাপুর ইউপির সাবেক মেম্বার রুপেন কুমার শীল জানান, কুমারী খালের বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে লোকালয়ে পাহাড়ি ঢল ঢুকে জন দূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
এনায়েতপুর এলাকার কৃষিজীবি অহিদুল আলম জানান, প্রবল বর্ষনে তার ১২ কানি জমির রোপা আমন চারা পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অ.দা.) নিয়াজ মোর্শেদ জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আসা দুর্গতদের খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা আমরা করবো এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রীও প্রস্তুত করা হয়েছে। আপাতত ২০ টি আশ্রয় কেন্দ্র এবং ২০ টি মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ বি এম মশিউজ্জামান বলেন, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে আর সংশ্লিষ্ট যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলো আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে মেডিকেল টিম, ত্রাণ রেডি করে রাখা হয়েছে। তবে কোনো কেন্দ্রে এখনো পর্যন্ত কেউ আশ্রয় নেননি বলেও জানান তিনি।

Discussion about this post