মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের বটুলি সীমান্তে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০১ সালে শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন তদন্ত কেন্দ্র (ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট) কার্যক্রম শুরু হয়।
শুরুর পর থেকে সীমান্তের এ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ব্যবহার করে ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকরা দু দেশে আসা যাওয়া করে।
এদিকে ২০০৩ সালে ভারত সরকার কোন ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বটুলি অভিবাসন তদন্ত কেন্দ্র দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা প্রদান বন্ধ করে দেয়। ফলে এ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিদের ভারতে যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়ে। তবে ভারতীয় নাগরিকেরা নানা কাজে প্রতিদিন বটুলী ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে বাংলাদেশে যাতায়াত করছে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বাংলাদেশিরা বটুলি ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে যাতায়াত করতে পারছেন না। ভারতের এ ধরনের ভিসা নীতির কারণে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
সম্প্রতি মৌলভীবাজার জেলার নবাগত জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বটুলি ইমিগ্রেশন পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। স্থানীয়রা সকল সমস্যার সমাধান করে অতি দ্রুত এ ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে যাতে বাংলাদেশিরা ভারতে আসা-যাওয়া করতে পারে সেই উদ্যোগ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে দাবি করছেন।
সরজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, বটুলি সীমান্তে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০১ সালে শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন তদন্ত কেন্দ্র (ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট) কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুর পর থেকে সীমান্তের এ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ব্যবহার করে ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকরা দু-দেশে আসা যাওয়া করে। কিন্তু হঠাৎ করে ২০০৩ সালে ভারত সরকার বাংলাদেশীদের জন্য এই ইমিগ্রেশন বন্ধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ ২০ বছর যাবত এ ইমিগ্রেশন ব্যবহারকারী বাংলাদেশীরা ভারতে যাওয়া-আসা করতে পারছেন না। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এ উপজেলার অনেকের আত্মীয়-স্বজন ভারতে থাকলেও তারা তাদের আত্মীয়-স্বজনকে দেখতে যেতে পারছেন না। চিকিৎসা ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে যেতে হলে তাদেরকে অন্য ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে ভারতে যেতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থের অপচয় হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। তারা দ্রুত এ ইমিগ্রেশন বাংলাদেশীদের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
সরজমিনে নিয়ে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিটিশ পাসপোর্ট ব্যবহারকারী এক বাংলাদেশী এই ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে বাংলাদেশে এসেছেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা একসাথে দুই বন্ধু ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছি। কিন্তু আমি এই ইমিগ্রেশন ব্যবহার করতে পারলেও আমার বন্ধু অন্য ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে বালাদেশে প্রবেশ করেছে। আমরা এই বিরম্বনার সমাধান চাই।
বটুলী শুল্ক স্টেশনের আমদানি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী নাজমুল আলম লিজন বলেন, এ ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতের নাগরিকরা যাতায়াত করতে পারলেও বাংলাদেশিরা পারছে না। ফলে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে অন্য ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে আমাদেরকে ভারতে যেতে হচ্ছে। দ্রুত এই ইমিগ্রেশনটি বাংলাদেশীদের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি জানাই।
ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম সেলু বলেন, আমাদের বটুলি ইমিগ্রেশন দিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর যাবদ বাংলাদেশিরা ভারতে আসা যাওয়া করতে পারছে না। দ্রুত এই ইমিগ্রেশন বাংলাদেশীদের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয় কে আমরা স্থানীয়দের যৌক্তিক দাবির ব্যপারে অবহিত করেছি।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, বটুলি ইমিগ্রেশন দিয়ে একসময় বাংলাদেশিরা ভারতে যেতে পারত কিন্তু বর্তমানে শুধু ভারতের নাগরিকরা বাংলাদেশে আসা যাওয়া করতে পারে। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে এই ইমিগ্রেশন যাতে বাংলাদেশিরা ব্যবহার করতে পারে সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/

Discussion about this post