মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলায় খাদ্যসামগ্রী এবং শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। আট হাজার পরিবারে খাদ্যসামগ্রী এবং দুই হাজার শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয় স্কুলব্যাগসহ শিক্ষা উপকরণ। রবিবার দিনভর দুই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এসব উপকরণ বিতরণ করা হয়।
এ ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সকলের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা।
জানা গেছে, পুরো আয়োজনের নির্দেশনায় ছিলেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীর। ক্লাবের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া পরিচালক শেখ সালেহ জামান সেলিম, পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম, মাকসুদুর রহমান, সদস্য মেজর (অব.) শেখ মো. মিজানুর রহমান এবং মো. আমিনুল ইসলাম। খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেটে ছিল ১০ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, দুই লিটার সয়াবিন তেল এবং এক কেজি করে ডাল ও লবণ। দৃষ্টিনন্দন স্কুলব্যাগের সঙ্গে ছিল ছয়টি খাতা, একটি করে পেন্সিল বক্স, কলম, পেন্সিল, শার্পনার, ইরেজার ও স্কেল।
কোটালীপাড়ায়: একই দিনে কোটালীপাড়ায় ৬ হাজার খাদ্যসামগ্রী এবং এক হাজার শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। সকালে শিল্পকলা একাডেমির সামনের মাঠে আয়োজিত মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, পৌর মেয়র হাজি মো. কামাল হোসেন শেখ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুশলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তব্যে শেখ সালেহ জামান সেলিম বলেন, ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধু পরিবারকে সপরিবারে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল। শিশু শেখ রাসেলকে পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়নি। কিন্তু চাইলেই বঙ্গবন্ধু পরিবারকে মুছে ফেলা যায় না। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড শিশু শেখ রাসেলকে দেশে-বিদেশে তুলে ধরার অনন্য প্রয়াস।
হাজি মো. কামাল হোসেন শেখ বলেন, শেখ রাসেলের স্মৃতি ধরে রাখতে বসুন্ধরা গ্রুপ যে দায়িত্ব নিয়েছে, তা কোটালীপাড়ার মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা পছন্দ করেন। নেত্রী যাঁকে পছন্দ করেন, আমরাও তাঁকে ইজ্জত করি। টুঙ্গি
শেখ আয়নাল হোসেন বলেন, বেগম মুজিব একজন মহিয়সী নারী। তিনি পাশে না থাকলে বঙ্গবন্ধু কখনোই জাতির পিতা হতে পারতেন না।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় দোয়া ও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন হয় কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
টুঙ্গিপাড়ার আয়োজন: টুঙ্গিপাড়ায় বিতরণ করা হয় দুই হাজার খাদ্যসামগ্রী এবং এক হাজার শিক্ষা উপকরণ। দুপুরে টুঙ্গিপাড়া হেলিপ্যাড চত্বরে বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের কাছে এসব উপকরণ হস্তান্তর করা হয়। এরপর জাতির পিতা সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স মসজিদে জোহর নামাজের পরে দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়। শেষে জাতির পিতার সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
টুঙ্গিপাড়ার আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বশার খায়ের, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ বাবুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফোরকান বিশ্বাস প্রমুখ।
বিকেল ৩টায় শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয় শেখ রাসেল দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে। শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় দৃষ্টিনন্দন স্কুলব্যাগসহ শিক্ষা উপকরণ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সহকারী পরিচালক মানব রঞ্জন বাশাড়।
সবশেষে টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা বাসস্ট্যান্ডে খাদ্যসামগ্রী এবং শেখ রাসেল শিশু নিকেতনে শিক্ষা উপকরণ বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post