দৌলতপুর প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাবে নি¤œমানের বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দৌলতপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুনের বিরুদ্ধে নি¤œমানের বাদ্যযন্ত্র হারমোনিয়ম, তবলা ও ক্রীড়া সামগ্রী কেরামবোর্ডসহ অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের অধীনে দৌলতপুর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর প্রত্যেকটিতে কো-অর্ডিনেটর, জেন্ডার প্রোমোটার, আবৃত্তি ও সংগীত শিক্ষক হিসাবে মোট ৩০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। করোনার কারণে গত বছরের ১৪মার্চ ক্লাবগুলোর কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। চলতি বছর তা চালু হলেও করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আবারও বন্ধ হয় ক্লাবের কার্যক্রম। এরই মধ্যে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে প্রত্যেক কিশোর-কিশোরী ক্লাবের জন্য সংগীত বিষয়ক বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়ের জন্য বরাদ্ধ আসে। আর এসব বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয় করেন দৌলতপুর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুন। গত ৯ আগষ্ট উপজেলা পরিষদ কনফারেন্স রুমে দৌলতপুরের ১৪ ইউনিয়নের সকল কিশোর-কিশোরী ক্লাবে বাদ্যযন্ত্র হারমোনিয়ম ও তবলা এবং ক্রীড়া সামগ্রী কেরামবোর্ড, দাবা, লুডুসহ খেলা-ধুলার অন্যান্য সামগ্রী বিতরন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার, উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. এজাজ আহমেদ মামুন ও দৌলতপুর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুন।
কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সংগীত শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টগণ বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী হাতে পেয়ে ক্ষোভে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। নি¤œমানের হারমোনিয়াম, তবলা ও কেরামবোর্ড হাতে তারা চরম ক্ষুব্ধ হোন এবং তারা বিষ্ময় প্রকাশ করে জানান, যে সব বাদ্যযন্ত্র কিশোর কিশোরী ক্লাবকে দেওয়া হয়েছে তা একেবারেই নি¤œমানের। এসব বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী কিছুদিন ব্যাবহারের পর তা ব্যাবহারের অনপোযোগী হয়ে পড়বে। তারা বলেন, যে মানের বাদ্যযন্ত্র হারমোনিয়াম সরবরাহ করা হয়েছে বাজারে ৫-৭ হাজার টাকার বেশী হবেনা। অথচ এসব বাদ্যযন্ত্র ক্রয়ের জন্য সরকারী বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার টাকা। নি¤œমানের যন্ত্র সামগ্রী ক্রয়ে লক্ষাধিক টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলেও তারা ক্ষোভের সাথে অভিযোগ করেন।
শুধু তাই নয় কিশোর-কিশোরী ক্লাবের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নাস্তার সরবরাহের অনিয়মের বিষয়েও অনেক শিক্ষক জানান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিঃ) জান্নাতুল ফেরদৌস এর বদলি জনিত কারনে দৌলতপুর উপজেলায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন মর্জিনা খাতুন। প্রকল্পের অধীনে ক্লাবগুলো শুরুর পর থেকে আগের কর্মকর্তা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমান কর্মকর্তা সহযোগিতা না করে শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও হয়রানি করে থাকেন। এছাড়াও চলতি বছরের প্রতি ক্লাবের ৩০ জন শিক্ষার্থীর ৩০ টাকা হারে ১৪টি ক্লাবের ১২কার্য দিবসে নাস্তা বাবদ ১ লাখ ৫১ হাজার ২০০ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তা জনপ্রতি সর্বচ্চ ১০-১২ টাকা হারে নাস্তা সরবরাহ করা হয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নাস্তা বাবদও প্রায় ১লক্ষ টাকা নয়ছয় করা হয়েছে বলেও তারা উল্লেখ করেন।
কিশোর কিশোরী ক্লাবে বাদ্যযন্ত্র সরবরাহের বিষয়ে দৌলতপুর শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সরকার আমিরুল ইসলাম বলেন, যে হারমোনিয়াম সরবরাহ করা হয়েছে তার সর্বচ্চ বাজার মূল্য ৭ হাজার টাকার উর্দ্ধে নয়। যা অল্পদিন ব্যবহারেই নষ্ট হয়ে যাবে।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে দৌলতপুরে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুন বলেন কিশোর-কিশোরী ক্লাবের বাদ্যযন্ত্র ক্রয়ের জন্য সরকারী বরাদ্ধের ১৩ হাজার টাকায় কেনা সম্ভব না হওয়ায় আমরা তার সাথে আরো ২ হাজার টাকা ভর্তুকি দিয়ে মোট ১৫হাজার টাকা করে বাদ্য যন্ত্র ক্রয় করেছি। চেষ্টা করেছি ভাল মানের বাদ্য যন্ত্র ক্রয় করার ।
দৌলতপুরের উপজেলা নির্বহী অফিসার শারমিন আক্তারের কাছে ক্লাবের বাদ্যযন্ত্র ক্রয়ে দূর্নিতীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিজে ক্রয় করেছে বাদ্যযন্ত্র। বাদ্যযন্ত্র ও ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়ে যদি কোন গরমিল থেকে থাকে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post