মোঃ আউয়াল হোসেন পাটোয়ারী, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) থেকেঃ ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে চাই নতুন জামা কাপড় জুতো। বছরজুড়ে এটা সেটা কিনলেও রমজান এলেই ঈদকে সামনে রেখে শুরু হয় কেনা কাটার উৎসব। ক্রেতাদের কথা ঈদের সময় কেনাকাটার মজাই আলাদা। সেই জন্মের পর থেকেই ঈদে কেনাকাটা চলছে। এ সময় সিয়াম সাধনার পাশাপাশি অন্যরকম আবহ বিরাজ করে। সারা বছরে বিচ্ছিন্নভাবে হলেও ঈদে ছেলে মেয়ে জামাই নাতীনাতনী বাবা মা ভাইবোনদের জন্য চলে কেনাটাকা। নিজের জন্য তেমনি কিছুনা হলেও অন্যদের পরন নতুন জামা কাপড় দেবার আনন্দ কম নয়। এসময় যেমন বিত্তবানরা তাদের বিলাসী কেনাকাটা করে। কেনাকাটার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। অন্যদিকে মধ্যবিত্ত নি¤œবিত্তরা তাদের চিরচেনা টান পোড়নের সাধ আর সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে স্বজনদের মুখে হাসি ফোটাতে প্রানান্তর চেষ্টা চালায়।
রোজার শেষ মূহুর্তে এসেও রামগঞ্জে মার্কেট গুলোতে ক্রেতাদের কমতি নেই। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে রামগঞ্জের ফুটপাত থেকে শুরু করে মার্কেটগুলোতে। সকাল থেকে রাত অবধি ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে বিক্রেতাদের। বিভিন্ন মার্কেট ও শপিং মল ঘুরে পছন্দের পোশাকসহ প্রয়োজনীয় ঈদ সামগ্রী খুঁজে নিচ্ছেন উৎসব প্রেমীরা। পোশাক, কসমেটিকস, জুতাসহ অন্যান্য দোকান ও ফুটপাতজুড়ে কেনাবেচা চলছে সমান তালে। তবে এবার ঈদের কেনাকাটা মানেই বিদেশী পণ্যের চাহিদা সব চেয়ে বেশি।
দরকষাকষি আর ক্রেতার ছোটাছুটিতে বেচাকেনা চলছে প্রায় বিরতিহীন ভাবে। টাকা কোনো বিষয়ই নয়, পণ্য পছন্দ হলেই হাতে নিয়ে নিচ্ছেন ধনঢ্য ক্রেতারা। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করেছেন প্রচুর। এদিকে শহরের সব মার্কেগুলোতেই ক্রেতার ভিড় ছিলো লক্ষ্যণীয়। বিভিন্ন হাটবাজারের দোকানগুলোতেও দেখা গেছে, উপচেপড়া ভিড়। কেনাকাটায় হুমরি খেয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। পোশাক, জুতা ও বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রীর দোকানে এমন চিত্র লক্ষ্য করা যায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার শুরু থেকেই এবার মার্কেটে কেনাকাটা জমে উঠলেও দিন যত যাচ্ছে ক্রেতাদের ভীড় ততই বাড়ছে। সকাল থেকে শুরু করে মধ্যরাত অবধি টানা ভিড় লেগেই আছে। নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর সব বয়সের ক্রেতার সমাগম রয়েছে। তুলনামূলক ভাবে নারী ও তরুণীদের ভিড় বেশি। দোকানীদের এখন দম ফেলানোর সময় নেই। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে শুক্রবারেও খোলা থাকছে শহরের বিপণিবিতানগুলো। এখন পর্যন্ত বেচাকেনা নিয়ে সন্তুষ্ট বিক্রেতারা। তবে দোকানদাররা জিনিসপত্রের দাম বেশি হাকছে বলেও অভিযোগ ক্রেতাদের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঈদের কেনাকাটার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিপুলসংখ্যক ক্রেতা ভিড় জমাচ্ছে। ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সব শ্রেণীর মানুষ। ভিড় জমাচ্ছেন মার্কেটগুলোতে। পেশার মানুষ তাদের সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে নির্বিঘেœ কেনাকাটা করতে পারছেন। জিয়া শপিং, নুরপ্লাজা, সিটি প্লাজা, নিউ মার্কেট, সোনাপুর বাজার, সমিতির বাজার ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ভিড় চোখে পড়েছে আবার দর্জির দোকানগুলোতেও। জমে ওঠেছে রামগঞ্জে ঈদের বাজার। প্রতিদিন ক্রেতা বাড়ছে উপজেলার বিভিন্ন মার্কেটে। রাতদিন চলছে বেচাকেনা। ছোট শিশু থেকে শুরু করে নারী পুরুষের পদচারণায় মুখরিত এখন উপজেলার বিভিন্ন বাজারের মার্কেটগুলো। ক্রেতা আকর্ষণে মার্কেটগুলোও বেশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। বর্ণিল আলোকসজ্জা, মনোলোভা ডেকোরেশনের মাধ্যমে সজ্জিত করা এসব মার্কেট যেন এখন ঝকঝক তকতক করছে।
পুরানো আইটেম বাদ দিয়ে এখন শপিংমলগুলোতে আপডেট পোশাক শোভা পেয়েছে। তরুণরা ঝুঁকছেন গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, ফতোয়া, জিন্স প্যান্টের দিকে। কিশোর ও শিশুদের পোশাক হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়। রং-বেরংয়ের দেশীয় শাড়ি কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন মার্কেটগুলোতে গৃহবধূরা। মার্কেটগুলোতে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি, কাতান শাড়ি, জর্জেট, স্টোন, পাকিস্তানি, ইন্ডিয়ানি, চোখের তারাসহ বিভিন্ন নামের শাড়ির কদর বেড়েছে এবারের ঈদবাজারে। মেয়েদের কাপপিচ, লং থ্রীপিচ, রেডিমেট লংগ্রাউন, বম্বে গ্রাউন, টুপাট কুটি, পাকিস্থানী, ইন্ডিয়ান পাশাপাশি বম্বে, মিশরী ও দেশীয় পাঞ্জাবির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কাপড়ের পাশাপাশি জুতা, প্রসাধনীর দোকানেও বেশ ভীড় করছে ক্রেতারা।
কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভীড় সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। বিপণিবিতানগুলোতে নারী ও শিশুদের ভীড় বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে মেয়েরা কাপড়ের পাশাপাশি পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে কসমেটিক্স সামগ্রী কিনতে ভিড় করছেন শহরের চুরি পট্টির বিভিন্ন কসমেটিক্স দোকানে। এছাড়াও যথেষ্ট ভিড় লক্ষ করা গেছে শহরের বিভিন্ন জুতার দোকানেও। ছোট থেকে শুরু করে সবাই পছন্দের জুতা কিনতে ব্যস্ত।
ঈদ মার্কেট করতে আসা রহিমা, লিপি, লাখিসহ কয়েকজন জানান, স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটা করতে মার্কেটে এলাম। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করবো। ঈদে পরিবারের জন্য কেনাকাটা করার মজাই আলাদা।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post