জে.এম রুমান দেওয়ান, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যতিক্রম মসজিদ হিসাবে পরিচিত ‘আদমজী জামে মসজিদ’ কেউ এই মসজিদকে ‘খোলা মসজিদ’ আবার কেউবা ‘দরজা-জানালা ছাড়া’ মসজিদ বলে থাকেন। তবে এই মসজিদটির নাম রাখা হয়েছে ‘আদমজী জামে মসজিদ’। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী জেনেভা ক্যাম্পের পাশে মসজিদটির অবস্থান।
এই মসজিদের কোনো দরজা-জানালা না থাকায় প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে অনেক মুসল্লী এখানে এসে নামাজ আদায় করেন, তবে ছুটির দিনগুলোতে বা ধর্মীয় কোন উৎসব মুখর দিনে এখানে মুসল্লীদের উপচেপড়া ভীর লক্ষ্য করা যায়। মসজিদের পাশে একটি পুকুর থাকায় মসজিদটি সবসময় শীতল পরিবেশ বিরাজমান থাকে।
মসজিদটিতে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন একটি গম্বুজ। রয়েছে সুন্দর একটি মিনার। প্রায় দুই হাজার মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন এই মসজিদে।
তবে জানা যায় ১৯৫২ সালে আদমজী জুট মিল কর্তৃপক্ষ দুই একর জমিতে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করে। জুট মিল বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত মসজিদটির সব ব্যয় মিল কর্তৃপক্ষ বহন করত। ২০০২ সালের ৩০ জুন মিল বন্ধ হওয়ার পর মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নিয়ে বিপাকে পড়েন এলাকাবাসী। মিল বন্ধ হওয়ার পর জুট মিল কর্তৃপক্ষ মসজিদের ফ্যান, মাইক ও সাউন্ড বক্স খুলে নিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীকে নিয়ে মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণের হাল ধরেন আদমজী উম্মুল ক্বোরা স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাকিম মো. জয়নুল আবেদীন। তিনি এখন মসজিদ কমিটির সভাপতি।
পূরনো এই মসজিদটি দরজা-জানালা ছাড়া কেন তৈরি করা হলো, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও মানুষ যে কোনো সময় আল্লাহর ঘরে সিজদাহ করতে চাইলে মসজিদে আসতে পারবেন। মসজিদে কোনো তালা থাকবে না। ওই দৃষ্টিকোণ থেকেই আদমজী জুট মিল কর্তৃপক্ষ এভাবে মসজিদটি তৈরি করেছে।
মসজিদের জন্য সরকারি কোনো সহায়তা নেয়া হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে মসজিদ কমিটির এই সভাপতি জানান, ‘মসজিদের পুকুরের পাশে দেয়াল করার জন্য কিছুদিন আগে আমরা ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আবেদন করেছি। হয়তো করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এখনও সহায়তা পাইনি।’
২০০২ সাল থেকে মসজিদটির ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন হাফেজ মাওলানা মো. সোলাইমান। তিনি জানান, অনেক মসজিদের পাশে দোকান থাকে। সেখান থেকে নির্দিষ্ট একটা অর্থ আসে। তবে আদমজী জামে মসজিদের নির্দিষ্ট কোনো আয় নেই। মসজিদের কয়েকটা ফল গাছ আছে ও মসজিদের পুকুরে মাছ আছে। এগুলো বিক্রি করে কিছু অর্থ আসে। আর প্রতি জুমায় মুসল্লিরা দান করেন।এগুলো দিয়েই মসজিদের খরচ বহন করা হয়।
কথা হয় আদমজী জামে মসজিদ কমিটির সদস্য জসিমউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন এ মসজিদের হাল ধরি তখন এমনও সময় গেছে আমরাই মসজিদ ঝাড়ু দিয়েছি। তবে এখন সবার সহযোগিতায় মসজিদটি আধুনিকায়ন হয়েছে। এখানে ইমাম-মুয়াজ্জিন ছাড়াও দুজন খাদেম রয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post