জামালপুরের মেলান্দহে অর্ধ কোটি টাকার রাস্তায় পুরাতন ইট ও নির্মান কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। নিম্ন মানের কাজ ও পুরাতন ইট ব্যবহার করার কথা জানান স্থানীয়রা।
মের্সাস এম আর এন্টারপ্রাইজের নামে ওই কাজটি করছে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইব্রাহীম খলিলউল্লাহ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামানের শ্যালক মাসুদ রানা।
মেলান্দহ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের রেখিরপাড়া বছির চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার মাথা হইতে নিয়ামত মন্ডলের বাড়ি হয়ে হাজরাবাড়ি বেলতৈল এলাকার পাকা রাস্তা পর্যন্ত হেরিংবনের ১হাজার মিটার কাজটি শুরু হয়েছে গত ২২জানুয়ারী। এ কাজটি করছে মেসার্স আর এম এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ কাজের প্রক্কলিত ব্যায় নির্ধারন করা হয়েছে ৬৩লাখ ৯৬হাজার ২শ ৪৫টাকা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এ রাস্তাটির কাজে পুরাতন ও দুই নাম্বার ইট ব্যবহার করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ হেরিংবন কাজের সলিংএ পুরাতন ইট দেওয়া হচ্ছে। আর উপরে ১নম্বর ইটের পরিবর্তে ২নম্বর দিয়ে কাজটি করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ কাজে বিট বালুর পরিবর্তে মাটি দিয়ে কাজটি করা হচ্ছে।
স্থানীয় এলাকাবাসি জানান, এ রাস্তার কাজে ঠিকাদার অনেক অনিয়ম করছে। এখানে পুরাতন ও ২নম্বর ইট দিয়ে কাজটি করছে। বিট বালুর পরিবর্তে মাটি দিয়ে কাজটি করেছেন। ঠিকাদার প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামানের শ্যালক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস করে না। ঠকাদারী প্রতিষ্ঠান মন গড়াভাবে ওই কাজটি করছেন বলে জানান স্থানীয়রা। স্থানীয়রা দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করে সঠিকভাবে কাজটি করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত মো.সিপন মিয়া জানান, আমি যতটুকু জানি, কাজটা উপজেলা চেয়ারম্যান করছে। আমি দেখাশুনা করি। আমি কাজের বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। তবে নিচে পুরাতন ইট বিছানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মেলান্দহ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো.ইব্রাহিম খলিলউল্লাহ বলেন, ‘প্রথমত ওই কাজটা মাসুদ দেখাশুনা করে। আমি ওই সাইডে যায়নি কোন সময়। দ্বিতীয়ত কেউ যদি বলে থাকে ২নম্বর ইট দিয়ে উপরে করে থাকি, তাহলে সেটা ভুল বলছে। ইটের বিষয়টা আমি ডিলিংস করছি। আমি পাঠিয়েছি। সব ১নাম্বর ইট। কোন ২নম্বর ইট যায় নাই। আর যেটা পুরান ইটের কথা শুনছেন, বর্তমান ইটের চেয়ে, সেই ইটটা যে কোন ১নাম্বার ইটের চেয়ে ভালো। হেরিংবনের কাজ এমনই হয়।
এ নিয়ে মেলান্দহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামানের শ্যালক মাসুদ রানা মুঠোফোনে বলেন, ‘কাজটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেবের কাজ। আমি অসুস্থ হসপিটালে ভর্তি আছি।
এ বিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.আব্দুর রাজ্জাকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমার কাজ হলেও, উপজেলার কাজ করার তো আমার রাইট নাই। ইটটা কেমন পুরাতন? গুনগত মান! ইটের গুনগতমান, টেস্ট রিপোর্টে গুনগত মান ঠিক আছে কি না? আমি খোঁজ নিয়ে দেখতেছি।
মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সেলিম মিঞা জানান, খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//এপ্রিল ১৬,২০২৩//
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post