বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন অতি দরিদ্রদের জন্য আত্মকর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) প্রকল্পে অভিনব কৌশলে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনির বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার ওই ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোতালেব গাজী আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ আমলে নিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ জামাল হোসাইনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীশ সুত্রে জানা যায়, আমতলর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের হতদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচী (ইজিপিপি) দুই প্রকল্পে ৬৬ লক্ষ ৭২ হাজার টাকায় কাজ দেয়। নীতিমালায় উল্লেখ আছে, দুই প্রকল্পে ১৩৯ জন হতদরিদ্রদের তালিকা করে ওই তালিকার শ্রমিক দিয়ে কাজ সমাপ্ত করতে হবে এবং শ্রমিকদের মোবাইলের মাধ্যমে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কাজের টাকা পরিশোধ করবেন। চেয়ারম্যান অ্যাড, এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি নীতিমালা অনুসারন না করে তার আত্মীয় স্বজন,অবসরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরীজীবি ও স্বচ্ছল ব্যাক্তিদের তালিকা করে নাম মাত্র কাজ করে মোবাইল সিম নিজের কাছে রেখে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে।
সরজমিনে খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রকল্পের কাজের তালিকায় শ্রমিক হিসেবে যাদের নাম রয়েছে তাদের অধিকাংশই অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবি, বর্তমান চেয়ারম্যানের আত্মীয়স্বজন ও স্বচ্ছল ব্যাক্তি।
এই তালিকায় অর্ন্তভুক্ত কবির প্যাদা বলেন, আমি কাজের বিষয়ে কিছুই জানিনা। আর হতদরিদ্র তালিকায় আমার নাম দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমি কোন টাকাও নেইনি।
তালিকায় অন্তরভুক্ত শ্রমিক অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী সদস্য মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, হতদরিদ্র তালিকায় আমার নাম কেন থাকবে? আমি এ কাজের বিষয়ে কিছুই জানিনা এবং টাকাও উত্তোলন করিনি।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড, এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমি নীতিমালা অনুসারে শ্রমিক দিয়ে সঠিক মত কাজ করেছি।
আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ জামাল হোসাইন বলেন, আমতলীর উপজেলার ইউএনও স্যার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এইচএম মনিরুল ইসলাম মনির বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আমতলী উপজেলারে গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ২৪ মে ২০২৩
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post