মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে রাস্তার পাশে জন্ম নেওয়া ফুটফুটে শিশু কন্যার কুমুদিনী হাসপাতাল থেকে দত্তক নিলেন ব্যবসায়ী লাল মুহামুদ ও তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম দম্পতির । দম্পতির বাড়ি ভুয়াপুর উপজেলার নিকলাই ভাড়ই গ্রামে।
আজ রবিবার ( ১৬ জুলাই) টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন হায়দার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাকিলা বিনতে মতিন এবং কুমুদিনী হাসপাতালের এজিএম (অপারেশন) অনিমেশ ভৌমিক লিটনের মাধ্যমে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগন শিশুকে ঐ দম্পত্তির নিকট হস্তান্তর করেন।
শিশুটিকে দত্তক নিতে ১৫ জন নারী পুরুষ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক ও সমাজ সেবা বরাবর আবেদন করেছিলেন।
আজ রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন জানান, শিশুটির পিতা কে তা বলতে পারছে না তার মা। অমানবিক এই ঘটনার খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহযোগিতায় ফুটফুটে শিশু ও তার মায়ের চিকিৎসা চলে কুমুদিনী হাসপাতালে।
হাসপাতাল কতৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাগন বলেছেন মহিলাকে দেখে মনে হচ্ছে প্রতিবন্ধি মানষিক ভারসাম্যহীন। কোন কিছু ঠিকমত বলতে পারছেন না।
গত (৫ জুলাই) ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের মির্জাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বাইমহাটি এলাকায় মহাসড়কের পাশে শিশুটির জন্ম হয়।
কুমুদিনী হাসপাতালের চিকিৎসকগন জানান, গত ৫ জুলাই বেলা সারে এগারটার দিকে পুলিশ এক মহিলাকে অসুস্থ্য অবস্থায় প্রসুতি বিভাগের ২৭ নম্বর বেডে ভর্তি করে দিয়ে যান। মহিলা তার নাম ও ঠিকানা বলতে পারছেন না। কখনো বলছেন নাজমা, কখনো ঝুমুর আবার কখনো বলছেন রিজনী। ঠিকানা বলছেন কখনো ঢাকা আবার কখনো বরিশাল। আর কিছু বলতে পারছে না। পিতা মাতার নাম ও নিজের নামও বলতে পারছে না। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর প্রতিবন্ধি নারীর পরিচয় মিললেও শিশুর পিতা কে তা জানা যায়নি। নারীর গ্রামের বাড়ি বরগুনা জেলায় বলে জানা গেছে। তার ভাই জাকারিয়ার উপস্থিতিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাগন শিশুর আপন ঠিকানার ব্যবস্থা করলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন এবং উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, মহিলা কোন কথা বলতে পারছে না এবং ঠিকানাও বলতে পারছেন না। সমাজ সেবা অধিদপ্তর এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনী ভাবে নবজাতক ও তার মায়ের ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নেন। এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৫ জন নিঃসন্তান নারী পুরুষ কুমুদিনী হাসপাতালে এসে শিশু কন্যার দায়িত্ব নিতে (দত্তক) নিতে আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক ও সমাজ সেবা অধিদপ্তর বোর্ড গঠন করে অনেক যাচাই বাছাই করে এবং শিশুর ভবিষ্যতের দিক বিবেচনা করে আজ রবিবার শিশু কন্যাকে লালন পালনের জন্য ভুয়াপুরের ব্যবসায়ী লাল মাহমুদ ও তার স্ত্রী মাহমুদা বেগগের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন হায়দার এবং সমাজ সেবা অধিদপ্তরের জেলা প্রভেশন কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেবসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে দত্তক নেওয়া ব্যবসায়ী লাল মুহামুদ ও তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম দপ¥ত্তি বলেন, আমাদের কোন সন্তান নেই। শিশুটিকে আমাদের নিজের সন্তানের মতন করে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো। আমাদের যা সম্পদ রয়েছেন এখন থেকে এর মালিক আমাদের এই সন্তান।
দৈনিক দেশতথ্য///এস//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post