কুষ্টিয়া শহরে মজমপুর এলাকায় এক আইনজীবীর ভাড়া বাসা থেকে এক তরুণীকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পরিবারের। সিসি ফুটেজে দেখা যায় লাশ নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছেন আইনজীবী সহ কয়েকজন। নিহতের মায়ের অভিযোগ আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জিলা স্কুলের সামনের মফিজ উদ্দীন লেনের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ওই আইনজীবী পলাতক রয়েছেন।
মারা যাওয়া তরুণীর নাম জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে তুলি (২০)। তিনি শহরের মোল্লাতেঘরিয়া এলাকায় ওহিদুল মোল্লার মেয়ে। তিনি কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
পুলিশ, সিসি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের (৯৯৯) ফোনকল পেয়ে মফিজ উদ্দীন লেনের গোলাম নবীর বাড়িতে যান। সেখানে তিনতলার একটি ফ্ল্যাটের ভাড়াটে আইনজীবী মাহমুদুল হাসান ওরফে সুমনের ফ্ল্যাটে লাশ ঝুঁলতে থাকে৷ পরে সুমন সহ কয়েকজন ৭ টা ২৪ মিনিটে লাশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরর্তীতে হাসু, সুমনের শ্বশুর মজিবার,সুমনের শালা আনোয়ার, সানোয়ার, রাব্বি তাৎক্ষণিক ভাবে ৭ এটা ৫২ মিনিটে এসে সুমনের স্ত্রী এশাকে নিয়ে চলে যায়। পরে মারা যাওয়া সেই মেয়েকে নিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
জরুরি বিভাগের সামনে আহাজারি করছিলেন জান্নাতুলের মা শরিফা খাতুন ও বড় বোন জান্নাতুন তাসনিম। শরিফা খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করার মেয়ে নয়। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সকাল আটটার দিকে ১০০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় জান্নাতুল। আজ (২২ আগস্ট) তার জন্মদিন। জন্মদিনে বান্ধবীদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। সন্ধ্যায় বড় মেয়ের জামাইকে ওই উকিল (মাহমুদুল হাসান) ফোন করে জানান, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করছে।’
ভবনের মালিক গোলাম নবী বলেন, চলতি মাসের ১০ তারিখ ওই আইনজীবী বাসা ভাড়া নেন। গত শুক্রবার তিনি বিয়ে করেছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নে। স্ত্রী নিয়ে বাসায় থাকেন। ঘটনার সময় বাসায় ওই আইনজীবী ও তাঁর স্ত্রী ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে জানতে পারেন, ফ্ল্যাটে এই ঘটনা ঘটেছে। এর বেশি কিছু জানেন না।
গোলাম নবীর স্ত্রী মিতা খাতুন বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি অপরিচিত এক মেয়েকে ছাদে হাঁটতে দেখেন। অপরিচিত দেখে কোন ফ্ল্যাটে এসেছেন, জানতে চান। তিনি আইনজীবীর কথা জানান। এরপর কী হয়েছে, জানেন না।
ঘটনার পর থেকে আইনজীবী মাহমুদুল হাসান পলাতক। তাঁর স্ত্রীকেও পাওয়া যায়নি। মাহমুদুল হাসানের দুটি মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয় কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। এ বিষয় একটি অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুুতি চলছে। যদি নিহতের পরিবারের সদস্যরা কোন অভিযোগ বা মামলা করেন তাহলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খালিদ সাইফুল//দৈনিক দেশতথ্য //২৩ আগষ্ট ২০২৩
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post