পটুয়াখালীর দুমকীতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি আর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে সাড়ে তিন বছর ধরে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে দৈনন্দিন পথচারীদের যেমন বাড়ছে দুর্ভোগ সেই সঙ্গে সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী।
থানা ব্রিজের পশ্চিম পারে গোলাম সরোয়ার হাফিজী মাদ্রাসা হয়ে পশ্চিম শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ সাড়ে তিন বছর ধরে পড়ে আছে।
সরজমিন দেখা গেছে, সড়কটির মাঝে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বৃষ্টি হলে পানি জমে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছে পথচারীরা। এ ছাড়াও মাঝে মাঝে ইটের খোয়া স্তূপ করে ফেলে রাখায় অটো, রিকশা, ভ্যান এমনকি মোটরসাইকেল চলাচলের ও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় অতিদ্রুত কাজ সম্পন্নকরণের দাবি এলাকাবাসীর।
জানা যায়, সড়কটি পাকাকরণের জন্য ২০২০ সালের ৭ই জানুয়ারি টেন্ডার আহ্বান করেন এলজিইডি এবং ১১ই ফেব্রুয়ারি নিয়ম মোতাবেক কাজটি সম্পন্ন করার অনুমতি পায় ‘পল্লী স্টোর’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশে ২০২১ সালের ১৬ই মার্চ পর্যন্ত নির্মাণের সময় বেঁধে দিলেও সাড়ে তিন বছরের অধিক সময়েও শেষ হয়নি সড়কের নির্মাণকাজ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে এলাকাবাসী। একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উপজেলার ৬টি রাস্তা পাকাকরণের কাজ পায়। সেসব রাস্তার কাজও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি বলে জানা যায়।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. শামীম খান বলেন, বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। এ ছাড়াও যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী বিধায় কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
এ দুর্ভোগের বিষয়ে লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করলেও আশানুরূপ ফল এখনো পাইনি।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘পল্লী স্টোর’ এর স্বত্বাধিকারী বাদল সরোয়ারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লাইসেন্স আমার নামে ঠিকই তবে কাজটি করে অন্য দু’জন। ইতিপূর্বেই সেই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এবং টেন্ডার বাতিল করে রি-টেন্ডার আহ্বানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেছি।
দুমকী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ড. হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, দীর্ঘ তিন বছর পূর্বে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর টেন্ডার সম্পন্ন হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ সম্পন্ন না করে ফেলে রেখেছে। ব্যক্তিগত ভাবে কাজ সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করেছি। রাস্তার কাজ ফেলে রাখায় একদিকে জনভোগান্তি বাড়ছে অন্যদিকে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ না করলে এলাকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করবো বলেও জানিয়েছি কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post