‘মানুষের ভোটের অধিকার একমাত্র আওয়ামী লীগই নিশ্চিত করেছে। ভোট চুরির সুযোগ নেই্। তাই বিএনপি জামাত ভোটে আসে না।
আজ বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় জেলা কালেক্ট্ররিয়েট মাঠের ভার্চুয়াল নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অথিতির বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সকলের উদ্দেশ্যে বলছি আওয়ামীলীগের প্রার্থী রয়েছে, দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী ও অন্য দলের প্রার্থী রয়েছে। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ উৎসবমুখর।
নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে ভোট দিতে সুযোগ দিন। দেশের সাধারণ মানুষ যাকে খুশি ভোট দিবে। জনগণ ভোট দিলে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করে উন্নয়ন ধারা অব্যহ্নত রাখবে।
শেখ হাসিনা তার ভাষণে বলেন ,ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ এমন একটি দেশ । যে দেশের প্রতিটি ছেলে মেয়ে প্রযুক্তি বিদ্যায় প্রশিক্ষিত হবে । সেখানে প্রতিটি মানুষ হবে স্মার্ট। যারা সবকিছু অনলাইন ও প্রযুক্তি নির্ভর হবে। আমাদের অর্থনীতি হবে ই-ইকোনমি। পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল হবে। ই-গভর্ন্যান্সের আওতায় আসবে সব খাত। আগামী ৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে ইনশাল্লাহ। সব বাধা অতিক্রম করে আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ১৯৯৬ হতে ২০২১ সাল আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় থাকার সময় গুলি ছিল বাংলাদেশের জন্য ছিল স্বর্ণ যুগ। বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে গেছে। যদিও কোভিড কিছুটা হলেও এ অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করেছে। কোভিডের অভিঘাতের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উল্লেখ করে তিনি এ যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য বিশ্ব নেতাদের আহবান জানান।
নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী জনসভায় বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনী সংস্কারের জন্য আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সাল হতে আন্দোল সংগ্রাম করে আসছে। এই সংগ্রামের ফলে ২১ বছর পর আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছিল। জিয়া সামরিক আইন অমান্য করে এক ব্যক্তি সেনাপ্রধান, শাসক হয়ে ছিল। সেখানে তিনি সামরিক আইন অমান্য করেছে। জিয়া কুখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজ কে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছে। তাদের মুখে দেশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার মানায় না।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, আগামীতে সরকার গ॥ঠন করতে পারলে দেশ হতে দুর্নীতি মুক্ত করা হবে। বাাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এমন কিছু আমি করতে দিতে পারি না। দুর্নীতি বাড়লে দেশের সৎ ও সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ে। কোন অবস্থাতে দেশের মানুষে বাডুক আওয়ামীলীগ হতে দিতে পারে না।
“সরকার ও আওয়ামী লীগের সাফল্য দেখে তাদের প্রতিপক্ষ জ্বলছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন কে সামনে রেখে আবারও বিএনপি জামাত ১৩-১৪ সালের মত আগুন সন্ত্রাস করছে। মা ও শিশুকে ট্রেনে পুড়িয়ে কাঠ কয়লা করেছে। এ দেশে এই আগুন সন্ত্রাসীদের কোন অবস্থায় ক্ষমতায় জনগণ যেতে দিবে না। আগুন সন্ত্রাস মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ কে প্রস্তুত রয়েছে। ভোট চুরি, দুর্নীতি, ভোট জালিয়াতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে সোচ্ছার থাকতে হবে। কুলঙ্গার তারেক লন্ডনে বসে আগুন সন্ত্রাসের ছক কষছে। সে তো সাজাপ্রাপ্ত আসামী।
১৫’ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করল তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীতিকথা কোথায় ছিল। ২০০১’ এর নির্বাচনে অত্যাচার-নির্যাতন করে জোর করে আমাদের হারানো হল। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রক্ত দিয়েছে, সংগ্রাম করেছে। এদেশে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনতা দেওয়া ও আলাদা বাজেট দেওয়া হয়েছে।
জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দলীয় প্রার্থী রয়েছে, দলীয় কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী গণ প্রার্থী হয়েছেন। সকলে প্রত্যেকে মিলে প্রতিটি ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাবেন। জনগণ যাকে খুশি তাঁকে ভোট দিবে। জনগণের উপর আমার আস্থা রয়েছে। কোনখানে ভোট নিয়ে যেন কোন মারামারি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের খবর না পাই। ভোট হবে উৎসবমুখোর।
ভার্চুয়াল জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও লালমনিরহাট তিন আসনের নৌকার প্রার্থী এ্যাডভোকেট মোঃ মতিয়ার রহমান দাবি করেন, তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, এপিজেট নির্মাণ ও মোগলহাট স্থলবন্দর চালুর। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, লালমনিরহাট অত্যন্ত অবহেলায় ছিল। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। তাই তো মঙ্গা আর ফিরে আসেনি। আগামীতে জনগণ নৌকায় ভোট দিলে সব পাবে। প্রধানমন্ত্রী হাস্য মুখে বলেন, লালমনিরহাট সদরের মানুষ বহুদিন ধরে নৌকায় ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি। এবার পেয়েছে নিশ্চিয় নৌকা উপহার দিবে।
”মাটিতে পা না রাখতে পারলে মাটির স্বাদ কেমনে পাবে”
প্রধানমন্ত্রী জনসভায় ভাষন দেয়ার পর পঞ্চগড়ের এমপি রেলমন্ত্রী নূলুল ইসলাম সুজনের সাথে ভার্চুয়ালি কথা বলেন , এ সময় মন্ত্রী সুজন বলেন, পঞ্চগড়েরর প্রায় সকল রাস্তা পাকা হয়ে গেছে। সামান্য কিছু রাস্তা মাটির রয়েছে। আগামীকে এসব রাস্তা পাকার করে দেয়ার দাবি তুলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী রসিকতা করে বলেন, মাটির রাস্তা না থাকলে মাটিতে পা না রাখলে মাটির স্বাদ কিভাবে বুঝবে।
লালমনিরহাটে ভার্চুয়াল জনসভায় উপস্থিত ছিলেন, সামাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ দুই আসনের নৌকার প্রার্থী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোঃ মোতাহার হোসেন এক আসনের নৌকার প্রার্থী, লালমনিরহাট তিন আসনের নৌকার প্রার্থী এ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত নন্দী এবং স্থানীয় নেতা প্রমুখ।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post