সারা দেশের ন্যায় সিলেট-৪ আসনে (জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানিগঞ্জ) নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে। এই জনপদের প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। শেষ মুহুর্তের প্রচারণায় নৌকা এবং সোনালি আঁশ প্রতীকই এগিয়ে রয়েছে। এ আসনের ৬ বারের এমপি ইমরান আহমদ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে উন্নয়ন কার্যক্রম জনসম্মুখে তুলে ধরার মাধ্যমে অনেকটাই ভোটের মাঠে এগিয়ে।
ইমরান আহমদ বর্তমানে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৮৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত রয়েছেন। বর্ষীয়ান এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ১৯৪৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ভারতের আম্বালায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ক্যাপ্টেন রশিদ আহমেদ ও মাতা কমরুন নেছা। শিক্ষা জীবনে তিনি ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল বিষয়ে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। তার সহধর্মিণী স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. নাসরিন আহমদ।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৪ আসন থেকে ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৭২টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন ইমরান আহমদ। একাদশ জাতীয় সংসদে মন্ত্রিসভায় প্রথমে তিনি প্রতিমন্ত্রী পরে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। তিনি ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বপ্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নাজিম কামরান চৌধুরীকে পরাজিত করে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এই আসন থেকে ষষ্ঠবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
স্হানীয় ভোটাররা জানান, ইমরান আহমদ ইতোমধ্যে ৬ বার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের সামনে সুযোগ রয়েছে নতুন রেকর্ড গড়ার। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হলে সপ্তমবারের মতো সিলেট-৪ আসনে সংসদ সদস্য হবেন, যা সিলেট বিভাগে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে সর্বোচ্চ।
পাথর খোয়ারী খোলাসহ পরিবেশ বান্ধব সিলেট ৪ আসন গড়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রার্থী হওয়া তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাংবাদিক মো: আবুল হোসেন আসনের প্রতিটি এলাকায় তার কর্মী সমর্থক নিয়ে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ দুজন ছাড়া আর কোন প্রার্থীর প্রচারণা চোখে পড়েনি।
আলাপকালে আবুল হোসেন বলেন, কিশোর বয়স থেকে এলাকার প্রতি আমার আলাদা মমত্ববোধ রয়েছে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজ জন্ম ভূমিকে নিয়ে প্রাধান্য দিয়েছি। আজ ও নিজ এলাকাকে নিয়ে কিছু করার স্বপ্ন দেখি। আসন্ন নির্বাচনে আসনের প্রতিটি মানুষের শুধু মৌলিক অধিকার নয়, তাদের সুষ্ঠু কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ একটি আলোকিত ও উন্নয়ন সম্ভাবনায় আসন গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা চাই।
প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, সিলেট ৪-এর উন্নয়নের পূর্ণ অংশীদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এই আসনের জনগণ। এই আসনের জনগণ ছয়বার আমাকে নির্বাচিত করে মহান জাতীয় সংসদে পাঠিয়েছে। তার পুরস্কার স্বরূপ শেখ হাসিনা আমাকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে সিলেটবাসীকে উপহার দিয়েছেন।
আগামী ৭ জানুয়ারি সিলেট ৪-এর জনগণ পুনরায় শেখ হাসিনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট এবং জৈন্তাপুর উপজেলা নিয়ে জাতীয় সংসদের ২৩২ সিলেট-৪ আসন। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৫ হাজার ১২৩ জন। তন্মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৬ হাজার ১১০ জন, নারী ২ লাখ ২৯ হাজার ১২ জন, এবং ১ জন হিজড়া ভোটার।সিলেট-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ৩ জন প্রার্থী। তন্মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ (নৌকা), ইসলামী ঐক্যজোটের মো. নাজিম উদ্দিন কামরান (মিনার), এবং তৃণমূল বিএনপির মো. আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ)।
সোহাগ//দৈনিক দেশতথ্য//ডিসেম্বর ২৮,২০২৩//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post