মনিরুল আলম মনির, শার্শা থেকে: এক কালের ঢাকা সদর ঘাটের পান ছিল বিখ্যাত। সেকালে দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে পানের সুখ্যাতি
পান নিয়ে নানা গল্প করতেন প্রবীন জনেরা।এমনকি স্থান পায় এ পানের গল্প কাহিনী।
বন্ধুর ভালবাসা দিতে এবং পেতে বন্ধুকে পানের খিলি দিয়ে সমাদর করা হতো।
আজ আর সে সদর ঘাটের পানের সুখ্যাতি না থাকলেও কালের আবর্তে সে পানের সুখ্যাতি এখন বেনাপোল। ছোট্ট একটি পানের দোকান, নাম জিয়া পান ভান্ডার।
দোকানদার জিয়াউর হোসেন পানের খিলি বিক্রি করতে করতে পানের প্রতি তার ভালবাসা এবং তার তৈরি খিলি পানের প্রতি ক্রেতাদের ভালবাসা আজ দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে তার তৈরি পানের খিলি’র স্বাদ আর গন্ধ ক্রেতাদের হৃদয় কেড়েছে। এ দোকানের পান খেতে সকাল সন্ধ্যা ভীড় জমায় ক্রেতারা।
তার দোকানের পানের খিলির ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ। আর এ স্বাদের রয়েছে হরেক রকম নাম। আর নাম বিশেষ দাম। ৫ টাকা থেকে শুরু করে ২০ টাকা পর্যন্ত প্রতি খিলি পানের দাম এখানে।
ডবল খিলির দাম ১৫ টাকা, বৌরানী মিষ্টি পান ২০ টাকা, নবাব পান ১০ টাকা এবং অর্ডিনারী পান ৫টাকা খিলি বিক্রি হয় এখানে। ১৫ বছর ধরে এ দোকানে পানের খিলি বিক্রি করেন জিয়াউর হোসেন জিয়া। তিনি জানান প্রতিদিন তার দোকানে ৪ শ থেকে ৫ শত পানের খিলি বিক্রি হয়।
কোন কোন সময় বিয়ে বাড়িতেও তার পানের খিলির অগ্রীম অর্ডার থাকে। তবে বিয়ে বাড়ি তিনি পান দিয়ে থাকেন বৌরানী মিষ্টি পানের খিলি। তাছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিভিন্ন উৎসবে এই জিয়ার পান ভান্ডার থেকে সু-স্বাদু হরেক রকমের পানের খিলি পার্সেল অর্ডারের মাধ্যমে নিয়ে থাকেন। বেনাপোল সীমান্তে ভ্রমন করতে আসা ভ্রমন পিপাসু মানুষেরা জিয়া পান ভান্ডারের এক খিলি পান না খেলে যেন ভ্রমনে অসমাপ্ত থেকে যায় তাদের।
ভারতের বিভিন্ন রকমারী মসলা, মাথম ব্যবহার করাতেই তার পানের খিলি এত সু-স্বাদু। তাছাড়া ভারতীয় বাবা জর্দা-১২০,৩০০,৬০০ এবং সুরভী জর্দা পানের খিলিতে ব্যবহার করে থাকেন তিনি।আর মিষ্টি পানে ব্যবহার করে থাকেন চমন বাহার জর্দা।
চৌগাছা উপজেলায় পান চাষিদের নিজস্ব জমিতে খৈল ব্যবহার করে উৎপাদিত এ পানের স্বাদ খুবই বেশী। সেখান থেকে আনা হয় এ সব পান। তার এ পানের খিলি একবার খেলে বার বার খেতে ইচ্ছে করে। জিয়া পান ভান্ডারে পানের খিলি কিনতে আসা ক্রেতা ইদ্রীস আলি ইদু জানান প্রতিদিন সে ১০/১৫ টি পানের খিলি খেয়ে থাকেন, যা এখান থেকেই নিয়ে থাকেন।
জিয়া পান ভান্ডারেরর মালিক জিয়াউর হোসেন জানান, বেনাপোল চেকপোষ্ট সাদীপুর সড়কের পাশে ১৯৯০ সালে এ দোকানটি দেন। প্রতিদিন ৪/৫ হাজার টাকার পানের খিলি বিক্রি করে লাভ হয় ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর তা দিয়েই চলে আমার সংসার।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post