নিজস্ব প্রতিনিধি (যশোর)
পরিবারের সদস্যদের মুখে এক মুঠো অন্ন তুলে দিতে হাজারো স্বপ্ন বুকে নিয়ে দুই মাস আগে যশোরের রকি ঢাকার বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেষ্টুরেন্টে ক্যাশিয়ার পদে চাকরি নিয়েছিলো।আলিম পাশ করার পর ঢাকায় চলে যান চাকরিতে। একই সাথে ফাজিল (বিএ) শ্রেণিতে পড়ার জন্য ফরম ফিলাপও করেছেন। কিন্তু আগুনে পুড়ে গেছে সেই স্বপ্ন, শেষ হয়ে গেছে পরিবারের আশা ভরসা। পরিবারের কাছে ফিরেছেন লাশ হয়ে।
২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ আগুনে মারা যাওয়া ৪৮ জনের একজন কামরুল হাসান হাবিব রকি (২১)।
রকি যশোর সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের ধোপাখোলা কারিগরপাড়ার কবির হোসেনের ছেলে। ১৭ ডিসেম্বর তিনি ঢাকায় যান এবং বেইলি রোডে ‘কাচ্চি ভাই’ নামে একটি রেস্টুরেন্টে হিসাবরক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে আগুন লাগার পরপরই রকি তার মাকে ফোন করেছিলেন। ফোনে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি মাকে জানান, আমি বোধ হয় এখান থেকে বেরোতে পারবো না। এরপর ফোন কল অফ হয়ে যায়। পরে তারা জানতে পারেন রকি মারা গেছে।
ধোপাখোলা গ্রামের মসজিদের ইমাম আব্দুল হালিম বলেন, ঢাকা একটা অভিশপ্ত শহর। প্রায়ই শুনি আগুন লাগে এবং অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ নানা স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় যায় আর লাশ হয়ে বাড়ি ফেরে। আমাদের রকিও তেমন একজন।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানায়, রকি খুবই ভালো মনের একটা ছেলে। তারা তিন ভাই। সে বড়, মেঝো ভাই নতুনহাট পাবলিক কলেজে পড়াশোনা করছে, ছোট ভাইয়ের বয়স পাঁচ বছর, সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার বাবা যশোর শহরে ইজিবাইক চালায়।
যশোর সদরের আরবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ঢাকায় রওনা দিই। শুনেছি, বৃহস্পতিবার আগুনে ‘কাচ্চি ভাই’ যশোরে আমাদের রকি। বেলা ১১টার দিকে যশোরে পৌঁছেছি।
বাদ জুমা তার নামাজে জানাজার শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/

Discussion about this post