শাহীন আহমেদ, কুড়িগ্রাম:কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী নেহাল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিক্ষা কেন্দ্র পায়ে শিকল পড়া অবস্থা এসএসসি পরিক্ষা দিচ্ছেন মোঃ আলম মিয়া (১৬) অথচ সপ্তাহ দুয়েক আগেও সে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতো।
একটি ঘটনায় হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারানোয় আলমের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবারটি।
জানা গেছে,আলম মিয়া ভুরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপাল পুর গ্রামের অটোরিকশা চালক আব্দুল আলীমের ছেলে।তিলাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি বছরে এসএসসি সমান পরিক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে পরিক্ষা দিচ্ছেন।আলম মিয়া কিছুদিন দিন আগেও সুস্থ স্বাভাবিক ছিল।দু সপ্তাহ আগে বাবার অটোরিকশায় ভুরুঙ্গামারী বাসস্ট্যান্ড থেকে ৪ জন যাত্রী নিয়ে সে সোনাহাট স্থল বন্দরের উদ্দেশ্য রওনা হন।পথে অটোরিকশায় থাকা যাত্রীরা আলম মিয়াকে একটি সমুচা খেতে দেয়। সমুচা খাওয়ার পর থেকে অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে।স্থল বন্দর যাওয়ার আগে কৌশলে ওই ৪ ব্যাক্তি পালিয়ে যায়।পরে পরিচিত এক অটো চালক তাকে বাসায় ফিরে আনে।সেই থেকে তার আচার আচরনে পরিবর্তন শুরু হয়। ধারনা করা হচ্ছে সমুচায় অতিরিক্ত চেতনা নাশক ক্যামিকেল মিশিয়ে অটো চুরির উদ্দেশ্য ছিল চক্রটির।
আলম মিয়ার বাবা আব্দুল আলিম বলেন,ওই ঘটনার পর থেকে আলম মিয়ার মস্তিস্ক বিকৃতি দেখা দেয়। মাঝে মাঝে স্মৃতি শক্তি ফিরে পায় এবং স্বাভাবিক আচরণ করে।তবে প্রায় সময় সে পাগলামী করছে। এছাড়াও বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙ্গচুর করে। বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়িতে ফিরেনা। বিভিন্ন জায়গায় রাত্রি যাপন করে। এ কারণেই তার পরিবার পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রাখা হয়।ডাক্তার দেখিয়ে কোন লাভ হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, টাকার জন্য উন্নত চিকিৎসা দিতে পারছিনা। আমাকে ও ওর মাকে আলম কোনভাবেই সহ্য করতে পারেনা। তাই সবসময় দাদুকেই তার সঙ্গ দিতে হয়।
ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব হারুন উর রশীদ জানান, ছেলেটি অসুস্থ হবার কারণে তাকে একটি আলাদা কক্ষে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। খাতায় লিখলেও মাঝে মাঝে চিল্লাচিল্লি করে, অশান্ত হয়ে যায় এবং লিখতে চায়না।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ কর্মকর্তা ডাঃ এ এস এম সায়েম জানান,আলম মিয়ার পরিবার ও তার সাথে কথা বলে যেটি মনে হয়েছিল সে খুবই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসার ব্যবস্থা নিলে আবারো সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে আলম মিয়া।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post