কর্পূর।
Cinnamomum camphora
পরিবারঃ Lauraceae
কর্পূর গাছ সবচেয়ে বেশী দেখা যায় রমনা পার্কে। মিরপুর জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান,বলধা গার্ডেন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও দুটি গাছ আছে। এটি একটি সুদর্শন ছায়াবৃক্ষ। ব্যতিক্রমী পাতার গড়ন,নিশ্চিদ্র বুনন ও ডালপালার বিন্যাস একবার দেখলেই সবার মনে থাকবে। এটা এ অঞ্চলের আদিবৃক্ষ নয়। প্রায় দুইশত বছর আগে এই উপমহাদেশে এর আগমন ঘটে। আদিআবাস চীন,জাপান ও মালয়েশিয়া।
কর্পূর মাঝারি উচ্চতার চিরসবুজ গাছ। এই গাছ ২০ থেকে ৩০ মিটার উঁচু হয়ে থাকে। প্রায় মাটির কাছাকাছি থেকেই ডালপালাগুলো চারপাশে সমান্তরালভাবে ছড়িয়ে পড়ে। মূলত এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই খানিকটা দূর থেকেও গাছটি সনাক্ত করা যায়।
কর্পূর গাছকে স্থানবিশেষ কাপুর গাছ নামেও ডাকা হয়।ছড়ানো ডালপালার অগ্রভাগে পাতাগুলো গুচ্ছবদ্ধ অবস্থায় থাকে। পাতা আকারে ছোট, অনেকটা তেজপাতা ও দারুচিনি পাতার মত। ফাল্গুন-চৈত্রে ছোট ছোট সবুজাভ ফুল ফোটে। তারপর জাম আকৃতির ফল আসে। গাছের কাঠ থেকে পাতন পদ্ধতিতে কর্পূর সংগ্রহ করা হয়। একটি পরিনত গাছ থেকে ৪-৫ কেজি কর্পূর পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে বাজারে যে সব কর্পূর পাওয়া যায় তা আসলে কর্পূর গাছ থেকে পাতন পক্রিয়ায় সংগৃহীত নয়। বর্তমানে Camphoris odour গাছ থেকে কর্পূর নিষ্কাশন করা হয়। যার গুনগত মান প্রকৃত কর্পূরের মত নয়। আজকাল চীন-জাপানে কর্পূরতুলসী গাছ থেকেও আধুনিক প্রক্রিয়ায় কর্পূর সংগৃহীত হয়।
কর্পূরের স্বাদ তিক্ত তবে বেশ সুগন্ধি। এই সুগন্ধির কারনেই বিভিন্ন খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে কর্পূরের ব্যবহার আছে। এছাড়াও পানি জীবানুমুক্ত করতে কর্পূর ব্যবহৃত হয়। আদিকাল থেকেই বিভিন্ন রকমের রোগ নিরাময়ে কর্পূরের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তীব্র সুগন্ধি যুক্ত কর্পুরের রঙ সাদা যা দেখতে অনেকটা লবনের মত। বীজ ও কলমের সাহায্যে এর বংশবৃদ্ধি করা যায়। কেউ চাইলে রমনা উদ্যান থেকে এর বীজ সংগ্রহ করে প্রোপাগেশন করতে পারেন।
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post