ফজলুল হক, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শিয়ালের কামড়ে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন।
এক শিয়াল পিটিয়ে হত্যা করলেও বাকী শিয়ালের আক্রমণ আতঙ্কে লাঠিসোটা নিয়ে পাহাড়া দিচ্ছেন আতঙ্কিত গ্রামবাসী।
এদিকে আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ভ্যাকসিন না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর পৌরসভার টানকালিয়াকৈর এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোরে স্থানীয় রতন মিয়া ও তার স্ত্রী হনুফা বেগমকে একটি শিয়াল আক্রমণ করে এবং তাদের কামড়ে দেয়।
এসময় স্থানীয় লোকজন ওই শিয়ালকে লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সেখানে ঠিকমতো ভ্যাকসিন না পেয়ে তাদের ঢাকা মহাখালী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে গত বুধবার বিকেলে ওই এলাকায় শিয়ালের কামড়ে নেওলা হকের ছেলে শামসুল হক(৫০), নজরুল ইসলামের ছেলে উসমান গণি (১০), কবির মিয়ার ছেলে আফনান হোসেন (১০), নুর আলমের স্ত্রী নাসিমা বেগম (৫০), আফসার আলীর ছেলে মেহমিত (৭), জলিল হোসেনের ছেলে শওকত হোসেন (৪০), শামসুল ইসলামের স্ত্রী হামিদা বেগম (৬০), জব্বার মিয়া (৪০) এবং ওইদিন সন্ধ্যায় পাশের জানেরচালা গ্রামের শাজাহান মিয়ার স্ত্রী বৃষ্টি বেগম (৩৫) ও তার নাতিন স্বর্ণা আক্তার (৬)সহ কমপক্ষে ১৫ জনকে আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাদের পরিবারের সদস্যরা। ওই হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে আহতরা পার্শ্ববর্তী টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মহাখালীতে যান।
দুদিনে শিশু ও নারীসহ ১৫জন শিয়ালের কামড়ে আহত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গ্রামবাসী। এছাড়াও আতঙ্কে লাঠি নিয়ে যাতায়াত করছেন শিশুরাও।
এদিকে এক শিয়াল পিটিয়ে হত্যা করলেও বাকী শিয়ালের আক্রমণ আতঙ্কে ওই ঘটনার পর স্থানীয় যুবকরা লাঠিসোটা নিয়ে গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত ও পরের দিন বৃহস্পতিবারও পাহাড়া অব্যাহত রেখেছে। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন কয়েকটি শিয়ালের গর্তেও।
স্থানীয় শাহিনুর ইসলাম বলেন, কয়েকটি শিয়াল পাগলা হয়ে গেছে। তাই সে সবাইকে কামড়ে দিয়েছে। আরো যাতে কামড়ে দিতে না পারে সেজন্য আমরা পাহাড়া দিচ্ছি। মুদি দোকানদার আজিজুল হক বলেন, সবাই এখন পাগলা শিয়ালের আতঙ্কে আছি। এই বুঝি শিয়াল এসে কামড়ে দিলো।
হেলাল পারভেজ বলেন, আমার মেয়েও এখন লাঠি নিয়ে চলাচল করে। আর শিয়াল আতঙ্কে আমার মেয়ের মতো অন্যান্য শিশুরাও লাঠি নিয়ে চলে। কিন্তু বেশির ভাগ শিশুরা ভয়ে বাড়ির বাইরে যাচ্ছে না। তবে সংশিষ্টদের প্রতি তাদের দাবী অতিদ্রুত পাগলা শিয়ালগুলোর বন্য আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, শিয়ালে কামড়ে দিলে কয়েকজন হাসপাতালে আসে। কিন্তু এর ভ্যাকসিন সদর হাসপাতাল ও মহাখালীতে থাকে। একারণে আহতদের সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এব্যাপারে কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, আমাদের বনবিভাগের আরো একটি শাখা রয়েছে। তাদের কাজ হচ্ছে বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা। তবে ওই শাখায় যোগাযোগ করা হলে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post