পটুয়াখালীঃ বিয়ের দাবিতে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাকিব মৃধার বাড়িতে বিয়ের দাবিতে তানজিমা রহমান অর্না (১৭) নামের এক শিক্ষার্থীর অনশন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের রাকিব মৃধার বাড়ির সামনে এ অনশনে বসেন ওই শিক্ষার্থী। রাকিব মৃধা শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের রফিক মৃধার ছেলে। অন্যদিকে তানজিমা রহমান অর্না বাকেরগঞ্জের ভরপাশা ইউনিয়নের হাবিবুর রহমানের মেয়ে।
বিয়ের দাবিতে অনশনে থাকা তানজিমা রহমান অর্না জানান,
দুমকি সরকারি জনতা কলেজে পড়াশোনা করতে এসে প্রায় এক বছর আগে পরিচয় হয় একই কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও বর্তমান উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব মৃধার সাথে। প্রথমে ফোনে ও ফেসবুকে কথা হলেও বিভিন্ন সময় দেখা করত রাকিব মৃধা। এরপর বরিশাল, পটুয়াখালী ও কুয়াকাটায় বিভিন্ন সময়ে ঘুড়তে নিতো। এমনকি বিভিন্ন বন্ধুদের বাসায়ও নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন রাকিব মৃধা। পরবর্তীতে যখন এলাকার মানুষ জেনে যায় তখন রাকিবকে বিয়ের চাপ দিলে নানান টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে গত ১৪ জুলাই রাকিবদের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে আসলে বাসায় কাউকে না পেয়ে চলে যায় অর্ণা। পরবর্তীতে ১৬ জুলাই আবার রাকিবদের বাড়িতে আসলে রাকিব জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলামের কাছে নিয়ে যান সমাধানের জন্য। তখন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কোন সমাধান না দিয়ে উল্টো হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যেতে বলেন অর্নাকে।
পরে ১৬ জুলাই রাতে আবার রাকিবদের বাড়িতে যান অর্না ও তার মা সাদেকুর রহমান রজি। কিন্তু সে সময় রাকিবদের বাড়িতে তালা লাগানো দেখে বরগুনার মায়ের বাড়িতে চলে যান অর্না। তবে এবিষয়ে কিছুই জানেনা রাকিবদের আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগী ওই তরুণীর মা সাদেকুর নাহার রজি জানান,
দীর্ঘদিন অর্নার সাথে প্রেম করার পর এখন বিয়ে করতে চাচ্ছে না রাকিব। তবে আমার মেয়ের সাথে কেন প্রেম করলে আর কেন বিয়ের স্বপ্নই বা দেখালো। এখন এলাকায় মুখ দেখাতে পড়ছে না অর্না সেই সাথে আমিও। মানুষ আমাদের দেখলে নানান কানাঘুষা করে। এছাড়া রাকিব অর্নাকে নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলামের কাছে গেলে তখন সাইফুল ইসলাম আমাকে ফোনে বলেন রাকিবদের পারিবারিক অবস্থা ভাল না, ওর সাথে বিয়ে হলে আপনার মেয়ে ভাল থাকবে না।
এব্যাপারে দুমকি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাকিব মৃধা বলেন, কে আমার বাড়িতে অনশন করছে সেটা আমার জানা নেই। তবে জেনে জানাচ্ছি বলে ফোন কেটে দেন তিনি
পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, রাকিব একটা মেয়েকে আমার কাছে নিয়ে আসে। মেয়েটি নাকি রাকিব মৃধাকে ভালবাসে এবং সে তাকে বিয়ে করতে চায়। পরে বিষয়টির কোন সমাধান দিতে না পেরে রাকিব ও ওই মেয়েটিকে চলে যেতে বলি এবং তাদের নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই মিটাতে বলে দেই। তবে মেয়ের মাকে হুমকি ধামকি দেয়ার ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি তাদের কেন হুমকি ধামকি দিতে যাবো।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনাদের থেকেই শুনলাম। তবে অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Discussion about this post