নিজস্ব প্রতিবেদক: কুষ্টিয়ায় নিম্ন আদালতের বিচারক ও বিচার সহায়ক(বে সহকারী) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকুরী ক্ষেত্রে বৈষম্য মুক্ত অধিকার দাবিতে আন্দোলন শুরু করছে।
মঙ্গলবার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদলত চত্বরে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন এর দপ্তরে সংগঠনের সভাপতি ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এক সভায় এসব দাবি তুলে ধরেন নেতৃবৃন্দ।
এসময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কুষ্টিয়ার জেলা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার তারিক আহাম্মেদ রিংকু বলেন, দেশে ২০ হাজারের মতো আদালত-সহায়ক কর্মচারী ত্রিমুখী কর্তৃত্বের এ জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছেন। নিম্ন আদালতের কর্মচারীরা বিচারিক কাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও অতি আবশ্যক হলেও তাদের বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি আজও।
সেই কারণে কর্মরত এসব নিম্ন আদালতের কর্মচারীরা বিব্রত। বৈষম্য মুক্তির জন্য তিন দফা দাবি হলো- কর্মচারীদের বাংলাদেশ বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারী হিসেবে গণ্য করে বেতন ভাতা নির্ধারণ করতে হবে। বøকপদ বিলুপ্ত করে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পদোন্নতি ও উচ্চতর গ্রেড দিতে হবে। এবং সকল কর্মচারীর জন্য এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে’।
বে সহকারী রিজিয়া খাতুনের দাবি, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে সরকারী অন্যান্য দপ্তরের কর্মচারীরা চাকুরী বিধিমালা অনুযায়ী যে সকল সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন আমাদের তার বালাই নেই। আমার স্যার যদি কখনও অফিস টাইমের অধিক সময় কাজ করে থাকেন তাহলে তিনি চাকুরী বিধি অনুযায়ী ওভার টাইমসহ সকল করম সুযোগ সুবিধা পান। স্যার যতক্ষন অফিস করেন আমাকেও ততক্ষন অফিসে থাকতে হয়। অথচ আমি এই অতিরিক্ত সময়ে অফিস টাইমের কোন ওভার টাইম পায়নি। এভাবে সর্বক্ষেত্রেই বিদ্যমান বৈষম্যের মুক্তি চাই’।
এসময় সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন নিয়ে নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ ও পদোন্নতি দিয়ে থাকেন আইন মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে সহায়ক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে থাকেন আইন মন্ত্রণালয়, বদলী করে থাকেন হাইকোর্ট বিভাগ। অন্যদিকে নি¤œ আদালতের সহায়ক কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রদান করে থাকেন জেলা জজ। আবার তাদের আন্তজেলা বদলি আদেম করেন হাইকোর্ট বিভাগ। আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বেতন ভাতাদি পরিশোধ করা হলেও নিয়ম কানুন অনুসরণ করা হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের। বিচার বিভাগের জন্য পৃথক পে স্কেল করা হলেও সহায়ক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে উক্ত পে স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এক কথায় বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের পর বিচারকদের জন্য যে সকল সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে, বিপরীতে বি ত করা হয়েছে সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে। বিচারকদের জন্য বিচারিক ভাতা থাকলেও বিচার সহায়ক কর্মচারীদের জন্য উক্ত ভাতা নেই। এমনইভাবে নানামুখী বৈষম্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছি আমরা নিম্ন আদালতের কর্মচারীরা’। অবিলম্বে এসব বৈষম্যের নিরসন করে পুঞ্জিভুত অসন্তোষ দুর করবেন বর্তমান সরকার তেমনটাই আশা করি’।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ১৪ আগষ্ট ২০২৪

Discussion about this post