হাটহাজারী প্রতিনিধিঃ
হাটহাজারীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পায়ে গুলিবিদ্ধ হওয়া সাইমের (২০) চিকিৎসা সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে গুলিবিদ্ধ সাইমের ঘরে গিয়ে জানা যায়, নিউজ প্রকাশের পর বিভিন্নজন তার সাথে যোগাযোগ করছেন।
জানা যায়, হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নের ২নং ওয়াডস্থ রুহুল্লাপুর গ্রামের দরিদ্র মো.সিরাজ ও রাশেদা আকতারের একমাত্র ছেলে গত ৫ আগস্ট হাটহাজারীতে চলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাওয়া সাইমের পায়ে লাগা বুলেটটি মোবাইল ফোন ভেদ করে হাঁটুর ওপর ঢুকে হাড় ভেঙে মাংস নিয়ে অপর পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায। হাসপাতালে নেয়ার পর অপারেশন হলেও সেটি সফল না হওয়ায় বর্তমানে টকার অভাবে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে পড়ে আছে ঘরে বিছানায়। বিষয়টি স্থানীয় সমাজ সেবক সৈয়দ মিয়ার মাধ্যমে খবর পেয়ে রবিবার সরেজমিনে একুশে পত্রিকার হাটহাজারী প্রতিনিধি মো.আলাউদ্দীন সাইমের ঘরে গিয়ে বিস্তারিত জেনে “বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সাইম” স্বপ্নের পথে গুলি;সাইমের চিকিৎসা থমকে, সাহায্যে জন্য করুণ আর্তি” শিরোনামে একুশে পত্রিকায় রবিবার রাত দশটার দিকে একটি নিউজ প্রকাশ হয়। পরদিন নিউজটি বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পরে নিউজটি সকলের দৃষ্টি গোচর হলে দৈনিক আজাদী পত্রিকা কর্তৃপক্ষ সাইমের চিকিৎসা সহায়তার জন্য আর্থিক সহায়তার দশ হাজার টাকা সোমবার দুপুরে আহত সাইমের হাতে তুলে দেন। এছাড়াও আমেরিকা সহ দেশের বিভিন্ন জন তার চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসার আশ্বাস দেয় বলে জানা গেছে।
চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের সময় একুশে পত্রিকার হাটহাজারী প্রতিনিধি মো.আলাউদ্দীন, কেশব কুমার বড়ুয়া (দৈনিক আজাদী), সাংবাদিক মোহাম্মদ হোসেন(দি কান্ট্রি টুডে), সমাজ সেবক সৈয়দ মিয়া প্রকাশ সৈয়দ মেম্বার, আহত সাইমের পিতা মো. সিরাজ, মাতা রাশেদা আকতার সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
আর্থিক সহায়তা পেয়ে আহত সাইম সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় সাইম বলেন, “পরিবারের সহায়-সম্বল বলতে বসতবাড়ির জায়গাটুকু ছাড়া আর কিছুই নেই। বাবার আয় খুবই অল্প। হাটহাজারী কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেছি, কিন্তু টাকার অভাবে অনার্সে ভর্তি হতে পারিনি। সংসারে আয়ের জন্য বাজারের একটি দোকানে চাকরি করছিলাম। এর মধ্যে একটা ঝড় আমার সব স্বপ্ন চুরমার করে দিলো। সাইম সকলকে তার সুস্থতার জন্য দোয়া করারও অনুরোধ জানিয়েছেন।
সাইমের মা রাশেদা আকতার বলেন, ছেলের পায়ের উপযুক্ত চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য আমাদের নেই। তিনি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের প্রতি তার ছেলের গুলিবিদ্ধ পায়ের উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ আগস্ট, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হবে এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকেও আহতদের চিকিৎসার ব্যয় মওকুফ করতে বলা হয়েছিল। তবে, সাইম ও তাঁর পরিবার এখনো কোনো সরকারি সহায়তা পাননি।

Discussion about this post