আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক: ইসরাইলের গুপ্ত ও প্রকাশ্য হামলায় হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইরানের শীর্ষ নেতাদের হত্যা ইরানের সকল ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়।
ইসরাইলকে শায়েস্তা করতে ইরান পহেলা অক্টোবর ইসরাইলে একশত একাশি টি হাইপার ছনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে জায়েনবাদীদের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিশোধ নিতে নাটের গুরু যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে ইসরায়েল ইরানে হামলার সম্পর্কিত মার্কিন গোয়েন্দাদের অত্যন্ত গোপনীয় নথি ফাঁস হয়েছে।
একটি নথি ইসরায়েল পারমাণবিক অস্ত্র থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছে, যা দেশটি কখনোই প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি। সিএনএন, টাইমস অফ ইসরাইল,আল জাজিরা, রয়টার্স।
ফাঁস হওয়া নথিগুলোকে ‘গভীর উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) টেলিগ্রামে ‘মিডল ইস্ট স্পেকটেটর’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে নথিগুলো ছড়িয়ে পড়ে। ‘টপ সিক্রেট’ চিহ্ন দেয়া নথিগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও তার পাঁচ মিত্র দেশ (অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্য) দেখতে পাবে এমন নির্দেশনা ছিল।
ফাঁস হওয়া গোপনীয় নথিগুলোতে ইসরায়েলের ইরানের বিরুদ্ধে হামলার প্রস্তুতির পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে।
ন্যাশনাল জিওস্পেশিয়াল-ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির একটি নথিতে উল্লেখ রয়েছে যে ইসরায়েল তার অস্ত্র মজুদ স্থানান্তর করছে।একইভাবে, ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির আরেকটি নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী সম্প্রতি এয়ার-টু-সারফেস মিসাইল ব্যবহারের মহড়া চালিয়েছে। এই মহড়া ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই মহড়া ইরানের বিরুদ্ধে হামলার প্রস্তুতির অংশ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে যাতে বোঝা যায় কারা পেন্টাগনের নথিতে প্রবেশাধিকার পেয়েছিল। এ ধরনের কোনো তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটলে এফবিআই, পেন্টাগন এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দ্বারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তদন্ত শুরু হয়। তবে এফবিআই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
একটি নথি ইসরায়েলের পারমাণবিক অস্ত্র থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছে, যা দেশটি কখনোই প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি। তবে নথিতে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইসরায়েলের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো পরিকল্পনা দেখেনি।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা মিক মুলরয় বলেছেন, “যদি ইসরায়েলের সামরিক পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে থাকে, তবে এটি একটি গুরুতর বিষয়”। তিনি আরও জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে ভবিষ্যৎ সমন্বয়েও সমস্যা হতে পারে, কারণ বিশ্বাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের কাছে সিএনএন মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করলে সংস্থাটি জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের অফিস এবং পেন্টাগনের কাছে পাঠিয়ে দেয় । তবে পেন্টাগন এবং ন্যাশনাল জিওস্পেশিয়াল-ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিও কোনো মন্তব্য করেনি।
আরেক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, “এই দুইটি নথি খারাপ, কিন্তু খুব খারাপ নয়। তবে উদ্বেগ হচ্ছে, যদি আরও নথি ফাঁস হয়।”নথিগুলো কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। এগুলো কি হ্যাক হয়েছে না কি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁস করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। এই ফাঁসের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্পর্কের একটি খুবই সংবেদনশীল সময়ে ঘটেছে, যা ইসরায়েলিদের ক্ষুব্ধ করতে পারে।

Discussion about this post