মোঃ ফয়সাল আলম রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীতে এক যুবলীগ কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাত পৌনে ৮টার দিকে তাকে সাগরপাড়া এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায় একদল যুবক। এরপর শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রামেক হাসপাতালে রেখে যায়।
নিহত যুবকের নাম মো. মীম (২৫)। রাজশাহী মহানগরের রামচন্দ্রপুর এলাকায় তার বাড়ি। বাবার নাম আবদুল মোমিন। তিনি যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
তিনি মহানগর যুবলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক রাজিব মতিনের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে থাকতেন।
মীমকে তুলে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৬ মিনিটে নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় একদল যুবকের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। ৮-১০ যুবক মীমকে জোরপূর্বক একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় তুলে নিয়ে যায়। তবে এই যুবকদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মীমকে অচেতন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে রেখে যায় তারা। হাসপাতালের ট্রলিম্যানরা তাকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক ২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তির নির্দেশ দেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময় যুবলীগ কর্মী মীমের মৃত্যু হয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) জরুরি বিভাগের ইনচার্জ শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিমকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। শরীরে প্রচণ্ড মারধর ও ছুরিকাঘাতসহ গুরুতর জখমের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে সে মারা গেছে।
পঞ্চবটি এলাকার স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর দুই হাতে গুলি চালানো যুবলীগ কর্মী জহিরুল হক রুবেলের আত্মীয় এই মীম। তিনি মহানগর যুবলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক রাজিব মতিনের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে থাকতেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে ছিলেন মীম। শনিবারই তিনি এলাকায় ফেরেন। এরপরই হামলার শিকার হন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় একদল যুবক যুবলীগকর্মী মীমকে ধাওয়া দেন। পঞ্চবটি এলাকায় এসে মীম তাদের হাতে ধরা পড়েন। সেখানে তাকে আটকে রেখে মারধর করা হয়। ছুরিকাঘাতও করা হয়। পরে রাতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কে বা কারা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন তা পুলিশ নিশ্চিত নয়।
বোয়ালিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তাজমুল ইসলাম জানান, মীম আওয়ামী লীগ করতেন বলে জানা গেছে। তার মরদেহ রামেক হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ নিয়ে থানায় হত্যা মামলা হবে। পরিবারের কেউ দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত থানায় এসে মামলা করেনি।
তিনি জানান, কে বা কারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত পুলিশ তা নিশ্চিত নয়। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

Discussion about this post