নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুটবল ফাইনাল খেলা দেখতে লক্ষাধিক দর্শক মাঠে ভরপুর ছিল। মাঠের চার পাশে বসার স্থান না পাওয়ায় খেলা উপভোগ করতে সহস্রাধিক দর্শক বিদ্যালয়ের টিনসেট ভবনে উঠে পরে। একটু পরেই হঠাৎ করে ভবন ভেঙ্গে নিচে পরে শতাধিক দর্শক আহত হয়েছে। ভবন ভেঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রায় আট লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভবন ভেঙ্গে পরায় বিদ্যালয় কতৃপক্ষ শ্রেণী কক্ষের অভাবে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে পরেছে বিপাকে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের জনতা গল্লী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গতকাল শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটেছে।
আজ শনিবার (৯ নভেম্বর) বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ক্ষয়ক্ষতির এ চিত্র তুলে ধরেন।
বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, পাকুল্যা-লাউহাটি রোডের পাশে মনোরম পরিবেশে ১৯৭৩ সালে জনতা গল্লী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ে বর্তমানে পাঁচশতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এবং শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ১৯ জন। শিক্ষা মন্ত্রনালয়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারি অনুদানে আজ পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ে বহুতল ভবন নির্মান হয়নি। এলাকাবাসি এবং নিজেদের অর্থায়নে কয়েকটি টিনসেট ভবন নির্মান করে পাঠদান পরিচালিত হয়ে আসছে। নানা সমস্যায় জর্জরিত বিদ্যালয়টি। এরই মধ্যে ভবন ভেঙ্গে পরায় আরো বিপাকে পরেছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে গল্লী পল্লী উন্নয়ন যুব সমিতি স্কুল মাঠে মাস ব্যাপি ফুটবল লীগ খেলার আয়োজন করে। খেলার প্রধান পৃষ্টপোষক ছিলেন সৌদি প্রভাসি জাহিদ হাসান। মির্জাপুর উপজেলার নগর ভাতগ্রাম তরুণ সংঘ এবং বাসাইল উপজেলার সিঙ্গাপুর ইউনিটি ফ্রেন্ডস ক্লাব ফাইনাল পর্বে উত্তীর্ন হয়। গতকাল শুক্রবার ছিল ফাইনাল ম্যাচ। খেলাকে উৎসব মুখর এবং জমকালো করতে দুটি দলই জাতীয় দলের এবং বিদেশী খেলোয়াড় নিয়ে এসেছিলেন। অতিথিবৃন্দ এসেছিলেন পাঁচটি হেলিকপ্টার নিয়ে। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী। খেলা দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লক্ষাধিক দর্শক উপস্থিত হলেও মাঠের চার পাশে তিল ধারনের ঠাই ছিল না। ফাইনাল খেলায় সহস্রাধিক দর্শক স্কুলের টিনসেট ভবনে উঠলে হঠাৎ করে ভবন ভেঙ্গে পরে। মাঠের চার পাশে দর্শকদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়। এ সময় শতাধিক দর্শক আহত হলেও কেউ মারা যায়নি। বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙ্গে প্রায় আট লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে বিপাকে পরেছেন কৃতপক্ষ। খেলায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে গোল শুন্য ভাবে ড্র হয়। পরে বাসাইল উপজেলার সিঙ্গাপুর ইউনিটি ফ্রেন্ডস ক্লাব ট্রাইব্রেকারে মির্জাপুর উপজেলার নগর ভাতগ্রাম তরুণ সংঘকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে পুরষ্কার লাভ করে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফাইনাল ফুটবল ম্যাচে লক্ষাধিক দর্শক উপস্থিত হলে তাদের মধ্যে সহস্রাধিক দর্শক স্কুলের টিনসেট ভবনে উঠে বসে। হঠাৎ করে ভবন ভেঙ্গে পরে প্রায় আট লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যালয়ে বিকল্প কোন ভবন বা শ্রেণী কক্ষ না থাকায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে চরম বিপাকে পরেছেন। বিদ্যালয়ের সার্বিক সহযোগিতার জন্য তিনি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জনতা গল্লী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলার সময় দর্শকগন বিদ্যালয়ের একটি টিনসেট ভবনে উঠলে টিনসেট ভবন ভেঙ্গে পরেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্ধ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post