
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতাঃ দীর্ঘ ছয় মাস আগে মালয়েশিয়ায় অপহরণকারীদের হাতে খুন হওয়া প্রবাসী ছেলের কফিনে মোড়ানো লাশ দেখলেন মা।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে তামিলজায়া এলাকার বাসার কাছ থেকে অপহ্নত হন প্রবাসী সোহেল। ৬ অক্টোবর কুয়াললামপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে জায়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক এলাকার একটি জঙ্গল থেকে ৩৯ বছর বয়সী এ রেমিট্যান্স যোদ্ধার লাশ পাওয়া যায়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় সোহেলের লাশের কফিন। শনিবার (০১ এপ্রিল) সকালে অ্যাম্বুল্যান্সযোগে তার লাশ নিয়ে আসা হয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দক্ষিণ ধলাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে। লাশ দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন একমাত্র ছেলে হারানো মা আমিনা বেগম ও তার স্বজনরা। সেখানে সৃষ্টি হয় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা আমিনা বেগম বলেন, লাশটা নিজের চোখে দেখলাম এটাই আমার শান্তি। আমার একমাত্র পোলার কবরটাতো দেখবার পারমু। ওরা আমার পোলারে যেভাবে কষ্ট দিয়ে মারছে হেবা কইরা যেন হত্যাকারীদের বিচার করে সরকার।
নিহতদের স্বজনরা জানায়, অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়ে সংসারের হাল ধরতে ১৫বছর আগে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান দক্ষিণ ধলাপাড়া গ্রামের আহমেদ মিয়ার ছেলে সোহেল। সেখানে একটি কারখানায় কাজ করতেন তিনি। এক ভাই এক বোনের মধ্যে সোহেল সবার বড়। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে তামিলজায়া এলাকার বাসার কাছ থেকে অপহরণ করা হয় সোহেলকে। মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণও আদায় করে অপহরণকারীরা। তারপরও মুক্তি না পাওয়ায় মালয়েশিয়ায় দুটি মামলা করেন সোহেলের মামা মিজানুর। মামলার প্রেক্ষিতে কাজং থানা পুলিশ চার প্রবাসী বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৬ অক্টোবর কুয়াললামপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে জায়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক এলাকার একটি জঙ্গল থেকে সোহেলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাখাওয়াত সেন বলেন, সোহেলকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে মামলা হয়েছে। তার লাশ দেশে এসেছে। তার লাশ ময়নাতদন্তের দাফনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সোহেল হত্যার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//
