এসএম জামাল, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো: তৌফিকুর রহমান বলেছেন, অটিজমের প্রতিটি শিশুই বিশেষ প্রতিভাসম্পন্ন। তাদের প্রত্যেকের মধ্যেই নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে দক্ষতা থাকে। এমন অনেক শিশু আছে, যারা অটিজমে আক্রান্ত হলেও মাত্রা কম, তাদের অনেকেই স্বাভাবিক শিশুদের মতো লেখাপড়া করতে পারে। আবার অনেকের গাণিতিক দক্ষতা স্বাভাবিক শিশুদের থেকেও বেশি হয়ে থাকে। তাই কোনোভাবেই তাদের পিছিয়ে পড়া শিশু ভাবা যাবে না। বরং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে তাদের পাশে থাকতে হবে। তাদের জন্য তৈরি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিষ্ঠাগুলো তাদের অভিনব পাঠদান, বিশেষ থেরাপি এবং প্রত্যেকর আলাদা আলাদা দক্ষতা খুঁজে তাকে সে বিষয়ে পারদর্শী করে তোলে।
মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে
১৮ তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রতিটি শিশুই সৃষ্টিকর্তার উপহার। কোনো শিশুই বোঝা নয়। তবে অটিজমের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনে এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের অবস্থার পরিবর্তনে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। অটিজম নিয়ে কুসংস্কার দূর করতে বেশি বেশি করে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই লোকলজ্জার ভয়ে তার অটিজমে আক্রান্ত সন্তানকে লোকচক্ষুর অন্তরালেই রাখতে চান, যা তাঁর সন্তানের সমস্যার বিস্তার ঘটাতে থাকে। বিপরীতে দ্রুত অটিজম শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিলে তাদের জীবনেও অনেকটা স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলেও জানান তিনি।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো: আব্দুল লতিফ শেখের সভাপতিত্বে এবং সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য সংস্থার চিকিৎসক ডা: কমলেশ, এম মাহমুদ হোসেন সাচ্চু প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিখন আহমেদ, এনডিডি স্কুলের অধ্যক্ষ আফসানা বেগম, অভিভাবক সাফিনা ইয়াসমিন ও বদরুন্নাহার বেগম প্রমুখ।
এরআগে “স্নায়ু বৈচিত্র্যকে বরণ করি, টেকসই সমাজ গড়ি” এ স্লোগানকে সামনে রেখে ১৮ তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রদক্ষিণ করে।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো: আব্দুল লতিফ শেখ জানান, জেলায় ৬৭ হাজার ৯০০ প্রতিবন্ধী রয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ হাজার ৫৬০ জন ভাতা ভোগী রয়েছে। এবং জেলায় ২ টা সরকারি এবং ১৫ টা বেসরকারি এনডিডি (অটিজম ও প্রতিবন্ধী) স্কুল রয়েছে।

Discussion about this post