পূর্ণিমার জোয়ারে প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রধান প্রধান নদী গুলোতে বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জোয়ারের পানি। এতে প্লাবিত হয়েছে বরগুনার নিম্নাঞ্চল। বিপদসীমার উপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হওয়ায় ডুবে গেছে বড়ইতলা-বাইনচটকি ফেরির গ্যাংওয়ে। এতে দীর্ঘ সময় ধরে যানবাহন চলাচলে বন্ধ থাকে যে কারনে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে শুরু করে জুলাই মাস পর্যন্ত নদীতে জোয়ারের পানির তীব্রতা বেড়ে যায়। পূর্ণিমার প্রভাবে উচ্চ জোয়ারের বিশখালী,বলেশ্বর নদীর মোহনায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৩ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়। রোববার (১৫ মে) রাতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বলেশ্বর ও বিশখালী নদীতে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়। একারনে ডুবে যায় আমতলী-পুরাকাটা ও বড়ইতলা-বাইনচটকি ফেরিঘাট। ফলে নদী পারাপারে যানবাহন এবং যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে বিষখালী নদীতে তীব্র জোয়ারে বরইতলা ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে৷ এতে নারী ও শিশুসহ মানুষজন কোমর সমান পানির মধ্যে দিয়ে হেটে তীরে উঠছেন, কেউবা আবার ফেরিতে উঠছেন। কখনো কখনো স্থানীয় জেলেরা তাদের নৌকা দিয়ে তীর থেকে গ্যংওয়ে পর্যন্ত যাত্রীদের পারাপার করছেন। তবে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ট্রাকসহ যানবাহনদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ইঞ্জিনে পানি ঢুকে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়৷ তাই জোয়ারের পানি না নামা পর্যন্ত তারা ফেরিতে উঠতে পারেনা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির বলেন, বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত নদীতে জোয়ারের চাপ থাকে। এসময় পূর্নিমা হলেই ঘাট থেকে রাস্তা পর্যন্ত তলিয়ে যায়। অনেক সময় আমাদের দোকানপাট পর্যন্ত জোয়ারের পানি চলে আসে।
রফিক নামে এক যাত্রী বলেন, সবসময়ই বছরের ৬ মাস দেখি জোয়ারের পানি বাড়লে বরইতলা ফেরিঘাট পানিতে ডুবে থাকে। এই জায়গা দিয়ে যাতায়াত করলে দুর্ভোগের কোন শেষ থাকে না। তবুও ব্যাবসা করি বলে বাধ্য হয়ে চলাচল করতে হয়। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে দাবি, শিগগিরই যেন এই সমস্যার সমাধান হয়।
পাথরঘাটার ব্যাবসায়ী জাফর বলেন, আমি পাথরঘাটা বাজারে ব্যবসা করি একটি মুদি দোকান আছে আমার। প্রয়োজনীয় মালামাল আনতে বরগুনা গিয়েছিলাম। কিন্তু এখন ঘাট ডুবে যাওয়ায় মালামাল সহ আমার ইজিবাইকটি ফেরিতে উঠতে পারছেনা। এখানে ৬ ঘন্টা ঘন্টা সময় লস হলো আমার।
ট্রাক চালক শফিক বলেন, আমি প্রান কোম্পানীর গাড়ি চালাই পাথরঘাটায় মাল ডেলিভারি দিয়ে আবার বরিশালে যাবো। কিন্তু ফেরিঘাটের পল্টনের সাথের সংযোগ সড়ক পানির নিচে থাকায় পাথরঘাটা ঠিকমত সময় মাল ডেলিভারী দিতে পারবো না এতে আমাকে অফিসে অনেক জবাবদিহি করতে হবে। আর ট্রাক ফেরিতে উঠাতে গেলে ইঞ্জিনে পানি ঠুকবে তাই বাধ্য হয়ে জোয়ার কমার অপেক্ষা করছি।
সড়ক ও জনপদ বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বরইতলা ফেরিঘাট সংস্কারের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। ইতিমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। শিগগিরই ফেরিঘাট উন্নয়নের কাজ শুরু হবে।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//১৬ মে-২০২২//

Discussion about this post