দেশজুড়ে টানা অবরোধ কর্মসূচিতে আরও একদফা ধস নামল সিলেটের অর্থনীতিতে।
অবরোধ-হরতালে ব্যবসাবাণিজ্য ঠিকমত না চলায় অর্থনীতির এমন দশা বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
তারা বলছেন,দেশের অন্যতম ধনাঢ্য শহর সিলেট।অঞ্চলটিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে বেশি।ফলে বছরে অন্তত একবার হলেও আর্থনৈতিক হুমকির মুখে পড়ে সিলেট। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন।করোনা,বন্যা পর হরতাল-অবরোধের চাপায় পড়েছে
সিলেট। ভাঙচুর-সংঘর্ষের আতঙ্কে যান চলাচল অস্বাভাবিক হওয়ায় জনজীবনে স্থবিরতা নেমেছে। ব্যবসাবাণিজ্য ঠিকমত হচ্ছে না। হতাশ হয়ে পড়েছেন বড় বড় ব্যবসায়ীরা। ফলে ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে অঞ্চলটির অর্থনীতি।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াতের চলমান অবরোধে সিলেট জেলায় প্রতিদিন প্রায় ৩০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
সিলেট নগরীর বন্দরবাজারের শীর্ষ কয়েক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান,রাজনৈতিক সহিংসতার প্রভাব পড়েছে সিলেটের সর্বক্ষেত্রে। টানা অবরোধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে অর্থনীতির মূলচালিকা শক্তি ব্যবসাবাণিজ্য। নগরজুড়েএখন আর্থনৈতিক মন্দাভাব। নীরব কান্নায় অশ্রু ঝরছে সিলেটবাসীর।
বন্দরবাজার বণিক সমিতির কয়েকজন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান,টানা অবরোধ ও হরতালে ব্যবসায় ধস নেমেছে। শ্রমজীবীরা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না স্বাভাবিকভাবে।আগে একদিনে যে ব্যবসা হত,এখন তিনদিনেও তা হচ্ছে না। অবরোধ আতঙ্কে কোনকিছুই হচ্ছে না। অর্থনীতির চাকা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
পাথররাজ্য নামে খ্যাত কোম্পানীগন্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন বলেন,টানা হরতাল-অবরোধে চরম ভোগান্তিতে আছে কোম্পানীগন্জবাসী। যথাযথভাবে
কোনকিছুই হচ্ছে না।উপজেলার আয়বহুল পাথর ব্যবসা,বালু ব্যবসা বন্ধ প্রায়। শ্রমজীবীরা নিয়মিত কাজ করতে পারছেন না। বাজারে দোকানপাট কিছুটা খোলা থাকলেও বেচাকেনা একদমই নেই বললে চলে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে অর্থ সঙ্কটে
মানুষ না খেয়ে মরবে। এদিকে অর্থনীতিতে দারুণ অবদান রাখা সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোও পর্যটক খরায় ভোগছে। ফলে সেখানকার ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের জীবনে স্থবিরতা দেখা
দিয়েছে। প্রত্যাশিত পর্যটক না থাকায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীসহ এ খাতের সঙ্গে জড়িতরা।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, গেল একসপ্তাহে অবরোধের কারণে সিলেটে পর্যটক না আসায় মোটা অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
সিলেট ট্যুরিজম ক্লাবের সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন বলেন,অক্টোবর মাস থেকে সিলেটে শুরু হয় পর্যটন মৌসুম। নভেম্বর-ডিসেম্বরে লাখো পর্যটকের পদচারণায়
মুখরিত থাকে সিলেট। কিন্তু পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই বিএনপি-জামায়াতের সমাবেশ, হরতাল ও অবরোধের কারণে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে সিলেট। এতে বিপাকে পড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। তিনি এসব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//