সুদীপ্ত শাহীন, লালমনিরহাট: যেতে দিব নাহি হয়, তবুও যেতে দিতে হয়। এমন একটি বিদায় বিদায় বড় কষ্টের, তবুও মানতে হবে। বেদনাদায়ক বিদায়ের অধ্যায় কে স্বরনীয় করে রাখতে মানুষের নানা আয়োজন থাকে। ব্যাতিক্রমী বিদায় অনুষ্ঠান আয়োজনে এক শিক্ষককে অবসর জর্নিত বিদায় কে ঘিরে হয়েছে। ঘোড়ার গাড়ি সাজিয়ে রাজকীয় বিদায়ের আয়োজন করা হয়ে ছিল শিক্ষকে সম্মান জানাতে।
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া নীলকান্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবর রহমান অবসর নিলে বর্ণিল এই বিদায় অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। মূলত শিক্ষার্থী, সহকর্মী শিক্ষক শিক্ষিকা ও অভিভাবক গণ এই ব্যতিক্রম আয়োজন করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবর রহমানের চাকরিজীবনের শেষ দিন ছিল। তাকে সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। বিদায়ী ওই শিক্ষক একই উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের গোপালরায় গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তেঁতুলিয়া নীলকান্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
বিদায় বেলা শিক্ষক মোঃ মজিবর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিদায় নিচ্ছি, কিন্তু আমার দোয়া রেখে গেলাম তোমাদের জন্য। তোমরা লেখাপড়া করে যখন অনেক বড় হবে, তখন আমাদের কথা মনে পড়বে।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফিয়া সুলতানা বলেন, মজিবর রহমান স্যার শুধু শিক্ষক ছিলেন না, তিনি আমাদের অভিভাবকের মতো আমাদের স্নেহ করতেন। তার বিদায় আমাকে খুব মর্মাহত করছে।
তেঁতুলিয়া নীলকান্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আঁখিরুজ্জামান বলেন, বিদায়ী শিক্ষক মজিবর রহমান শুধু একজন প্রধান শিক্ষক নন, তিনি আমার ভাইয়ের মতো ছিলেন। যেকোনো বিষয়ে তার কাছে পরামর্শ নিতাম। বিদায় বড় কষ্টের, তবুও মানতে হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) শিক্ষা অফিসার বীরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, একজন শিক্ষক যখন তার চাকরিজীবন শেষে বাড়ি ফিরে যায় তখন অনেক কষ্ট পায়। সমাজে হয়ত হিন্যমন্নতায় ভুগে। সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের রেখে চলে যাওয়া খুব কষ্টে। ব্যতিক্রমী এমন আয়োজন তাকে মানষিক শক্তি যোগাবে। রাজসিক সম্মান শান্তি অনুভব করবে।
বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তেঁতুলিয়া নীলকান্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম সভাপতিত্বে করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) শিক্ষা অফিসার বীরেন্দ্রনাথ রায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আ ব মোকতাদের বিল্লাহ্, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার রনবীর কুমার রায়, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার যোগেন্দ্রনাথ সেন, বারাজান এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার । এসময় শিক্ষক, অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের সকল ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//