তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র ও বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান বলেছেন, আগামীতে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসার সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী দল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আর তাদের নেত্রী ২০০৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিএনপি’র প্রতি যে অন্যায় অত্যাচার,অবিচার করেছে তা এদেশের মানুষ ভুলবেনা।
শুক্রবার ২৫শে এপ্রিল বিকেলে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়নের বাউরবাগ রমিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে আবার জনগণের রাজত্ব ফিরে আসবে। যে যতই চেষ্টা করুক আমজনতা পার্টি, জনতার পার্টি, অমুক পার্টি, তমুক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বিভিন্ন ধরনের পার্টি বের হচ্ছে। এদের কোন বেইজমেন্ট নেই। দুইটা ভোটও পাবে কিনা সন্দেহ আছে।
তিনি বলেন, বিগত ১৮ বছর বিএনপি’র প্রতি যে অন্যায় হয়েছে আগামী নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে বিএনপিকে বিজয়ী করে এর পরিসমাপ্তি ঘটাবে। প্রতিপক্ষ থাকুক আর নাই বা থাকুক আমরা বিএনপি’র সমর্থকরা জনগণের কাছে বিএনপি’র ৩১ দফা দাবি নিয়ে ঘরে ঘরে যেতে হবে। মানুষকে বুঝাতে হবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশের কল্যাণে জনগণের কল্যাণে কি কি কাজ করবে! দলের সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। যে কোন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। জনগণের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতে হবে। সুখ দুঃখের খোঁজ রাখতে হবে জনগণের তাহলেই বিএনপি’র বিজয় সুনিশ্চিত হবে।
নাসের বলেন, দেশে নির্বাচন যদি গুনতে হয় তাহলে গুনতে হবে ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের নির্বাচন। এরপরে আর দেশে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি। ২০০৮ সালে একটা নির্বাচন হয়েছিল যারা ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন এটাকে নৌকার ভোট হিসেবে গণনা করা হয়েছিল। ভোট গ্রহণ শেষে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এসে সেন্টারের দরজা বন্ধ করে ধান শীষের ব্যালট পেপার নৌকার ভোটের সাথে গুনে প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরে বাধ্য করেছিল।
যেখানে নৌকা পেয়েছিল ২০০ ভোট আর ধানের শীষ পেয়েছিল এক হাজার ভোট সেখানে ৫০০ ভোট ধানের শীষ নৌকার ওপর রেখে বান্ডিল বেঁধে ঘোষনা দিয়েছে ৭০০ ভোট নৌকায় লিখো আর পাঁচশো ভোট ধানের শীষে লিখো। এভাবে হয়েছিল ২০০৮ সালের নির্বাচন। এরপর থেকে দেশে যতো নির্বাচন হয়েছে সব জাল জালিয়াতির তুমি,আমি,আর ডামি ভাগবাটোয়ার তামাশার নির্বাচন। দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে মার খেতে হয়েছে। ভোট সেন্টারে মানুষ যায়নি। এইগুলোর এখন আর সুযোগ নেই।
সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক মাওলানা আব্দুল হেকিমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলহাজ্ব আব্দুল মুকিত, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আলহাজ্ব বদরুল আলম, জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, বকসী মিছবাউর রহমান, মুজিবুর রহমান মজনু, সদর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়াছ আহমেদ, সদর উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক মারুফ আহমেদ।
এতে আরো বক্তব্য দেন মনুমুখ ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা মিয়া, সদর উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জিল্লুর রহমান প্রমুখ।
দীর্ঘদিন পর ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দেয়। সম্মেলনে প্রার্থীরা দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের বিলবোর্ড দর্শনীয় স্থানগুলোতে ছেয়ে যায়। সম্মেলনে ইউনিয়ন সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় মো.মোস্তফা মিয়া নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুর রহমান ২২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রার্থী সিরাজ মিয়া ২১৩ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। মোট ভোটার ছিল ৪৫৯ টি। ভোট প্রয়োগ করা হয় ৪৪১ টি। বাতিল ভোট ১টি। দুটি বুথে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো.ফখরুল ইসলাম ও মুজিবুর রহমান মজনু। পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করেন সদর উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জিল্লুর রহমান, কাজল মাহমুদ,শেরওয়ান আহমেদসহ স্থানীয় বিএনপি নেতা জগলু আহমেদ ও খালেদ চৌধুরী।

Discussion about this post