রাকিবুল ইসলাম তনু, পটুয়াখালী :পটুয়াখালী পৌরশহরে অবৈধ ট্রলি ও ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচল দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ ধরনের বাহনগুলোর বেপরোয়া গতিতে চলাচলের কারণে মাঝে মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। ফলে অকালেই ঝরে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ। অবৈধ এসব যানবাহনের উৎপাতে অতিষ্ঠ স্কুলগামী কমলমতি শিশু-কিশোরসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এসব যানবাহনের ফলে কাউকে আবার সারা জীবনের মতো বরণ করতে হচ্ছে পঙ্গুত্ব। এছাড়াও এগুলোর বিকট শব্দের কারণে ঘটছে শব্দদূষণও। ফলে স্কুলগামী শিশু-কিশোরসহ জনসাধারণকে সার্বক্ষণিক আতঙ্কে চলাচল করতে হচ্ছে। কিন্তু চোখের সামনে অবৈধ এই যানের অবাধ চলাচল দেখেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ফলে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পৌরশহরে সর্বত্র।
অবৈধ এ যান চলাচলের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শহরের রাস্তাঘাট ও হচ্ছে রাস্তায় প্রচুর যানযট , ছোট ছোট রাস্তায় কোনো রকম সাবধানতা ছাড়া গাড়িতে রড নিয়ে যায় এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে এতে অনেক আতংকে থাকে সাধারণ জনগণ এবং ইট, বালি,সিমেন্ট না ঢেকে নেওয়ার কারনে এইগুলো বাতাসের সাথে উড়ে এসে চোখে যায় সাধারণ জনগনের এবং পুরো রাস্তাটাই দখলে থাকে ট্রাক্টর ট্রলি ড্রাইভারদের। অধিক লাভের আশায় কৃষি কাজের ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি এই যন্ত্রটি পণ্য পরিবহন কাজে ব্যবহার করছে এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি এবং ট্রাক্টরের সামনে পিছনে সাইডে প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের প্রতিষ্ঠানের নাম ও সাইনবোর্ড লাগিয়ে বেপরোয়া গতিতে চালানো হয় এই সব যান । ট্রলি ও ট্রাক্টরের ড্রাইভারদের জন্য কোনো লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় অতি সহজেই এসব পরিবহন কিনে ব্যাবসার কাজে ব্যাবহার করে ব্যবসায়ীরা। তারা এসব ট্রাক্টর কিনে কৃষি কাজের পরিবর্তে ব্যবহার করছে পরিবহন কাজে। ফলে পৌর শহরে ট্রাক্টরের সংখ্যা দিন দিন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার প্রতিটি উপজেলায় তার ব্যাপক প্রভাব বিস্তার রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চাষাবাদের জন্য আমদানি এই ট্রাক্টর অবৈধ ট্রলি সহ নানা পরিবহনে রূপান্তরিত হয়ে মানুষের সর্বনাশ করছে। আবাদি জমি ছেড়ে দাবড়ে বেড়াচ্ছে শহর সহ গ্রামীণ জনপদে কিংবা বাজার কেন্দ্রিক জায়গাগুলোতে। ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় শিশু কিংবা কিশোররাও অদক্ষভাবে এসব ট্রাক্টর অবাধে চলাচলের সুযোগ পাচ্ছে, ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। শহরে প্রতিদিন অসংখ্য ট্রলি ও ট্রাক্টর বিভিন্ন ধরনের মালামাল নিয়ে অবাধে চলাচল করছে। কিন্তু বাংলাদেশ মোটরযান আইনে পাকা রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহনের তালিকায় এর কোনো অস্তিত্ব নেই।
এ ব্যাপারে স্কুলপড়ুয়া পাবেল বলেন, প্রতিদিন সকাল হলেই আমাদের স্কুলে যেতে হয়। ট্রাক্টরের বেপরোয়া গতির ফলে ধুলোবালিতে আমাদের অনেক সমস্যা হয়। রাস্তায় আমাদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় কখন কোথায় আবার চাপা দিয়ে দেয়, যেমন ইচ্ছে চালায় আর অনেক গতিতে চালায় মাঝে মধ্যে এমন গতিতে যায় মনে হয় এই বুঝি আমার বুকের উপরে দিয়ে ট্রাক্টর গেলো ।
এ ব্যাপারে সানজিদা আক্তার তিশা বলেন, এই সব ট্রাক্টর যেগুলো শুনেছি মাঠে কৃষি কাজের সেই সব ট্রাক দেখি এখন শহরের মধ্যে আর এই সব ট্রাক্টরে ড্রাইভাররা খুবই বেপরোয়া এবং রাস্তা পুরোটাই তাদের দখলে থাকে এবং বিকট শব্দ করে এবং বালি নিয়ে গেলে ঢেকে না নেওয়ার কারনে এইসকল বালি বাতাসের সাথে সাধারণ পথচারীদের চোখে পরে এইসব ট্রাক্টর দেখলেই ও শব্দ শুনলেই বুক কেপে উঠে।
রিকশা চালক কাশেম ব্যাপারী বলেন, কি বলবো এইসব ট্রাক্টর খুবই বিপদজনক এরা খুবই শব্দ করে আসে এবং পিছন থেকে জোরে হর্ন দেয় এবং পুরো রাস্তা দখল করে দিনে দুপুরে যাওয়া আসা করে এতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় যেখানে সেখানে থামিয়ে রাখে, মালামাল উঠায় নামায় রাস্তার মধ্যে দিয়ে চালায় সামনে পেছনে কিছু না মেনে যেখানে সেখানে দ্রুত গতিতে যায় আবার হুটহাট যেখানে সেখানে ব্রেক করার কারনে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমাদ মাঈনুল হাসান বলেন,পটুয়াখালীতে এই সব ট্রাক্টর চলাচল করে আমি আমার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ, ও পুলিশ পরিদর্শক শহর ও যানবাহন শাখাকে জানিয়ে দিচ্ছি এদেরকে আইনে আওতায় আনার জন্য।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post