কুষ্টিয়া: এপার বাংলা ওপার বাংলার জনপ্রিয় লেখক ও সাহিত্যিক ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ইমদাদুল হক মিলন বলেছেন, অসহায় মানুষের স্বাবলম্বী করতে কাজ করে যাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। নিহারনের ঘরটি একটি মহত উদ্যোগ মাত্র।
তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় সারাদেশে অসহায়দের খুঁজে খুঁজে বের করছি তাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। যাদের একেবারেই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই তাদের আমরা ঘর করে দিচ্ছি। যাদের থাকার মতো ঘর রয়েছে কিন্ত চলতে পারছে না তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলতে আমরা দোকান করে দিচ্ছি, ভ্যানগাড়ী কিনে দিচ্ছি, হাস মুরগী ও ছাগল কিনে দিচ্ছি। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার জন্য শিক্ষা সহায়তা প্রদান করে আসছি।
সোমবার (২১ মার্চ) দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় অসহায়দের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখি ইউনিয়নের হড়রা গ্রামের নিহারনের হাতে নির্মাণ করা ঘরের চাবি তুলে দিয়ে তিনি একথা বলেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের হয়েই আমি শুভ সংঘের মাধ্যমে সারাদেশে এই কাজটি করছি। শুভসংঘ তৈরিই করা হয়েছে শুভ কাজে সবার পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আর সবকিছুই করা হয়ে থাকে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশনায়।এসব ভালো কাজ চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি। ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ্এনও) সাধন কুমার বিশ্বাস, শুভসংঘ কুষ্টিয়ার সভাপতি হাজী রফিকুল আলম টুকু, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান,কালের কণ্ঠ শুভসংঘের কেন্দ্রীয় পরিচালক জাকারিয়া জামান, কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক তারিকুল হক তারিক, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুন,চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের ষ্টাফ রিপোর্টার জাহিদুজ্জামান, শুভসংঘ কুষ্টিয়ার প্রচার সম্পাদক এসএম জামালসহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাধন কুমার বিশ্বাস বলেন, সমাজের অসহায় মানুষের জন্য বর্তমান সরকার ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। তবুও সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি কিংবা বিত্তবানরা যদি অসহায় মানুষের জন্য এগিয়ে আসে তবেই প্রকৃত উপকার হবে তাদের কল্যাণ বয়ে আনবে।
ঘর পেয়ে খুশি নিহারন খাতুন। তিনি বলেন, অনেক কষ্টে ছিলাম, তবে এই ঘরটি পেয়ে আমি সেই দুঃখ ভুলে গেছি।আল্লাহ শুভ সংঘকে আরও বেশি বেশি শুভ কাজ করা তৌফিক দান করুক। আল্লাহ বসুন্ধরা গ্রুপের মঙ্গল করুক এবং বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানকে আল্লাহ ভালো রাখুক।
প্রসঙ্গত, নিহারণ খাতুন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখি ইউনিয়নের হড়রা গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের গৃহীনি। দরিদ্রতার চরম কষাঘাতে জীবন সংগ্রামী এক নারী। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। অন্যের জমির খুপড়ি ঘরের একটি ঘরে থাকতে হয় পরিবারের ৬ সদস্য ছেলে-পুত্রবধু এবং মেয়ে-জামাই ও স্বামী রিক্সাচালক মন্টুকে নিয়ে। এভাবেই তারা বসবাস করে আসছেন। ঘরের মধ্যে নেই বেড়া, চালের মধ্যে পলিথিনের জোড়া তালি দিয়ে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়। আর্থিক অনটনের কারণে মেরামত করাও সম্ভব হয়ে ওঠে না। নিহারনের বাবা মারা যাওয়ার পর ২ কাঠা জমি পেলেও কিন্তু সেখানে একটি ঘর করার সাধ্য হয়ে ওঠেনি। স্বামী ও ছেলের উপার্জন দিয়ে কোনমতে সংসার চললেও লাজলজ্জা ভুলে অন্যের ঘরে কখনো ৪জন আবার কখনো ৬ জন একঘরে এক সাথে থাকতে হয় তাদের। নিহারনের এই দুর্দশার কথা বুঝতে পেরে এগিয়ে আসে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ। প্রথমে তাদের খোঁজ খবর নিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে কালের কন্ঠ শুভসংঘ নিহারণের নিজের জমিতে একটি টিনের ঘর করে দেয়।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post