রুম্মান দেওয়ান, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি ।।নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেনকে অস্ত্র মামলায় পৃথক দুটি ধারারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমীন বৃহস্পতিবার নূর হোসেনের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সালাহ উদ্দিন সুইট বলেন, নূর হোসেনই ছিলেন এ মামলার একমাত্র আসামি।
“সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে অস্ত্র আইনের ১৯(এ) এবং ১৯(এফ)-দুই ধারায় সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।“
রায় অনুযায়ী নূর হোসেন দুই ধারার সাজাই একসঙ্গে ভোগ করবেন বলে জানান পাবলিক প্রসিকিউটর সুইট।
এ মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই আদালত পাড়ায় এবং এজলাসের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। রায় ঘোষণার পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নূর হোসেনকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
২০১৪ সালের ১৫ মে দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে নূর হোসেনের স্টোররুমে অভিযান চালিয়ে একটি রিভলভার, আট রাউন্ড গুলি ও আটটি কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ৷ এরপর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়৷
তিন মাস পর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা৷ বিচার চলার সময় নূর হোসেনের বিরুদ্ধে চারজন সাক্ষী দেন।
অস্ত্র মামলার রায়ের পর নূর হোসেনকে কড়া নিরাপত্তায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার সিদ্ধিরগঞ্জের এ অস্ত্র মামলার রায় ঘোষণার পাশাপাশি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে আরেকটি অস্ত্র এবং মাদক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলে।
অস্ত্র মামলায় একজন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও দুই জন কনস্টেবল সাক্ষ্য দেন। আর মাদক মামলায় সাক্ষী ছিলেন পুলিশের একজন কনস্টেবল। এ দুই মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আদালত ২৯ সেপ্টেম্বর দিন রেখেছেন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরের দিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।
ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম হত্যার ঘটনায় ১১ মে একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। এই মামলার বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি আলোচিত এই মামলায় চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ ২৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//৪ আগষ্ট-২০২২

Discussion about this post