আজ ২২ শে শ্রাবণ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮১ তম মৃত্যু বার্ষিকী। বাংলা ১৩৪৮ সনের এ দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোয় বর্ষণসিক্ত শ্রাবণে তিনি পরলোকগমন করেন। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কনিষ্ঠ পুত্র রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের সব শাখাতেই বিচরণ করেছেন।
কবিগুরুর হাত ধরে বাংলা সাহিত্য নতুন রূপ লাভ করে। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে তার রয়েছে অসামান্য অবদান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্পী, চিত্রশিল্পী, অভিনেতা, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, ছোটগল্পকার ও ভাষাবিদ। মানুষের মুক্তির দর্শনই ছিল রবিঠাকুরের দর্শন।এই কবি বিশ্বাস করতেন বিশ্বমানবতায়। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই দর্শনই অন্বেষণ করেছেন।
৮০ বছরের জীবনসাধনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জন্ম এবং মৃত্যুকে একাকার করে তুলেছিলেন অমরতার শাশ্বত বার্তায়। কলকাতায় জন্ম হলেও পৈতৃক জমিদারি দেখভালের জন্য তিনি বাংলাদেশে এসেছেন বহুবার। কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও নওগাঁর পতিসরে জমিদারবাড়ি আজও তার স্মৃতিচিহ্ন বহন করছে।
প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। আর এরই মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে গেছেন।
১৮০৭ সালে রামলোচন ঠাকুরের উইলসূত্রে রবীন্দ্রনাথের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর এ জমিদারির মালিক হন। রবীন্দ্রনাথ জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে প্রথম শিলাইদহে আসেন ১৮৮৯ সালের নভেম্বর মাসে।
জমিদারির দেখাশোনা করতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কৈশোরে এবং তার পরবর্তীকালেও মাঝে মাঝে এখানে আসতেন এবং এই কুঠিবাড়িতেই থাকতেন।
এ সময় এখানে বসেই তিনি রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, ইত্যাদি, গীতাঞ্জলী কাব্যের অনুবাদ কাজও শুরু করেন।
কবিগুরুর প্রয়ান দিবস উপলক্ষে কুমারখালী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আগামীকাল দুপুরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মঞ্চ তৈরিসহ সমস্ত প্রস্তুতি সম্পুর্ণ করা হয়েছে।
তবে এবার কবির প্রয়ান দিবসে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে সরকারিভাবে তেমন কোনো আয়োজন না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংস্কৃতিক কর্মী ও রবীন্দ্র প্রেমিরা।
তবে এবিষয়ে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, শোকাবহ আগস্ট মাসের মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে কবিগুরুর প্রয়াণ দিবসে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্বল্প পরিসরে অনুষ্ঠান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীকাল শিলাইদহ কুঠি বাড়ীর বকুল তলার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//আগস্ট ০৫.২০২২//