শেখ দীন মাহমুদ,খুলনা প্রতিনিধি:
আজ ১০ ডিসেম্বর। শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লা’র ৫১তম শাহাদৎবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের আজকের দিনে হানাদার মুক্ত করতে তিনটি রণতরিসহ খুলনা অভিমুখে যাত্রাকালে শিপইয়ার্ডের অদূরে ভুল সিগন্যালে মিত্রবাহিনীর বোমা হামলায় স্বাধীন বাংলার এ দু’ সূর্য সন্তান শহিদ হন। পরে তাদেরকে রূপসা নদীর পূর্ব পাড়ে সমাহিত করা হয়।
যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষ্যে প্রতিবারের মত এবারও রূপসা প্রেসক্লাব দু’ দিনের কর্মসূচি গ্রহণসহ বাংলাদেশ নৌবাহিনী, রূপসা উপজেলা প্রশাসন পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আজ সকালে মাজার প্রাঙ্গনে নৌবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও রূপসা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিকেলে রূপসা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভা, দোয়া ও সন্ধ্যা ৭টায় প্রেসক্লাব ক্রীড়া চত্বরে ৮ দলীয় ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় রূপসা প্রেসক্লাবের সদস্যদের অংশ গ্রহণে ১৬ দলীয় ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের উন্মাদনায় মুক্তিকামী নৌ সেনারা নেভাল জেটি হলদিয়া থেকে ৩টি রণতরী বি এন এস ‘পদ্মা’, ‘পলাশ’ ও আই এন এস ‘পানভেল’ (ভারতীয়) নিয়ে বাংলার জলসীমায় যাত্রা শুরু করেন। মোংলা বন্দরসহ বিভিন্ন এলাকা হানাদারমুক্ত করে ১০ ডিসেম্বর ভোরে খুলনাকে হানাদারমুক্ত করতে তৎকালীন পাকিস্তানি নৌঘাঁটি তিতুমীর দখল করতে রওনা হয় রণতরী ৩ টির যোদ্ধারা।
রণতরী বহরের প্রথমে ভারতীয় জাহাজ আই এন এস ‘পানভেল’, মাঝে বি এন এস ‘পলাশ’ ও শেষে আই এন এস ‘পদ্মা’ একই গতিতে এগোতে থাকে। দুপুর ১২টার দিকে জাহাজ তিনটি খুলনার শিপইয়ার্ডের অদূরে পৌঁছালে ভুল সিগনালের কারণে মিত্র বাহিনীর যুদ্ধ বিমানের নিক্ষিপ্ত বোমায় ‘পলাশ’ ও ‘পদ্মা’ জাহাজ বিধ্বস্ত হয়। এর মধ্যে আংশিক বিধ্বস্ত হয়ে পদ্মা’র ইঞ্জিন বিকল হয়ে নদীর চরে আটকা পড়ে এবং পলাশ জাহাজে আগুন ধরে যায়। এ সময় জীবন বাঁচাতে অনেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু পলাশের ইঞ্জিন রুম আর্টিফিশিয়ার (চিফ ই আর এ) রুহুল আমিন অগ্নিদগ্ধ রণতরী পলাশ ও বিপন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজেই শহিদ হন। একই সাথে বীর বিক্রম মহিবুল্লাহ, নৌ- সেনা ফরিদ উদ্দিন, আখণার উদ্দিন, দৌলত হোসেন ও নৌ-কমান্ডো মোঃ রফিকসহ ১০ জন শহিদ হন। এর পর স্থানীয়রা যুদ্ধ বিধ্বস্ত পলাশে থাকা বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লাহসহ অন্যান্য শহীদ সূর্য সন্তানদের মরদেহ রূপসা নদীর পূর্ব তীরে সমাহিত করেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post