নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ
সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী এম.ডব্লিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী নামজুল হুদার স্বপদে পুনর্বহালের হাইকোর্টের নিদের্শনা মানছে না বিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ।
সাময়িক বরখাস্তকৃত আদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে পুর্নবহালের নিদের্শনা দেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
বরখাস্ত হওয়ার দুই বছরেও বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে যোগদান না করতে পেরে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
জানা যায়, আদমজীনগরে ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মার্চেন্ট ওয়ার্কারস (এম.ডব্লিউ) উচ্চ বিদ্যালয়। গাজী নাজমুল হুদা প্রধান শিক্ষক পদে যোগদানের এক বছর পরে বিদ্যালয়ের নন-এমপিভূক্ত কেজি শাখার টিউশন ফি নিজের তহবিলে রাখার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করে তৎকালীন বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি। শিক্ষা অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টির ২টি পৃথক তদন্ত করে। তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে সাত লক্ষ সাতাত্তর হাজার একশত চুরানব্বই টাকা জমা দেওয়ার প্রমান পায়। প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে শিক্ষা অধিদপ্তর গত বছর এই বিষয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিদ্যালয়ের মতামত চায়। বিদ্যালয়ের কোন মতামত না পেয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাইকোর্টের পূর্ব দির্শেনা মোতাবেক বরখাস্তকৃত আদেশ প্রত্যাহার করে প্রধান শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহাল করতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে পত্র দেন।
ম্যানেজিং কমিটি আদেশ বাস্তবায়ন না করে উল্টো তড়িঘড়ি করে জাতীয় দৈনিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা এক শিক্ষককে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়।
প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা জানায়, করোনাকালীন সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় নন-এমপিভূক্ত কেজি শাখার টিউশন ফিসের হিসেব সম্পন্ন করতে পারিনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে রক্ষিত অর্থের হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করে আদায়কৃত অর্থ তিন দফায় ব্যাংক হিসেব নম্বরের অ্যাকাউন্টে জমা দেই এবং এডহক কমিটির সভায় লিখিতভাবে উপস্থাপন করি।
এডহক কমিটি বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। দুই বছর ধরে পিতা-মাতা, স্ত্রী, সন্তানদের ভরন-পোষন, চিকিৎসা, বাড়ীভাড়াসহ সন্তাদের লেখা পড়ার খরচ মিটাতে হিমশিম খাচ্ছি।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আবু তালেব জানান, মানবিক দিক বিবচেনা করে ও হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে তাকে স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে। তিনি বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের রিট এর আদেশ বলে কোন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের তারিখ থেকে একশত আশি কার্য দিবসের মধ্যে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে কার্যধারা শুরু করতে হবে, ব্যর্থতায় কার্যধারা স্থগিত/ সমাপ্ত হবে এবং শিক্ষককে একই পদে পুন:প্রতিষ্ঠিত করা হবে এবং সমস্ত বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্য হবেন।
ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি মতিউর রহমানের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post