শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট থেকে:
লালমনিরহাট জেলাসহ উত্তরাঞ্চলে কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডা পড়ছে। দিনের বেলাও সূর্যের দেখা মিলছেনা। এ কারণে কৃষক ও কৃষিতে নেমে এসেছে বিপর্যয়।
লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের জেলায় জেলায় শীতের সবজি আলু ক্ষেতে দেখা দিয়েছে লেট ব্লাইট বা নাভি পঁচা রোগ। এটি ছত্রাকজর্নিত রোগ। এতে আলো খেতের পাতা কুঁকড়ে যায়। আলুর গাছের গোড়া হতে পঁচে যায়। আলুর গাছ মরে যায়। কৃষকেরা আলু ক্ষেতে ছত্রানাশক স্প্রে করেও ভালপ্রতিকার পাচ্ছেনা।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে রোদ উঠলে আবহাওয়ায় উত্তাপ ছড়াবে তখন ছত্রাক সংক্রামণ হ্রাস পাবে। সেই সময় ছত্রানাশক সঠিক ভাবে কাজে আসবে। কৃষক ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করায় সেটাতে ধরেছে সেটা মরে গেছে। অন্য গাছে সংক্রামন হ্রাস পেয়েছে।
জামা গেছে, আলুচাষের ভান্ডার বলা হয় তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান নদীর চরাঞ্চল কে। এছাড়াও উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে ভুটার পর ব্যাপক ভাবে খামার পদ্ধতিতে আলু চাষ করা হয়। এখানে শুধু আলু চাষী নয়, হিমাগার মালিক ও বড়বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গুলোর পক্ষে হতে জমি ভাড়া নিয়ে ব্যাপক হারে আলু চাষ করে থাকে। গত বছর আলু দাম পাওয়ায় এবারে তো আলু চাষে কৃষক সংক্রামিত হয়ে পড়েছে। এখনো পুরাতন আলু ৮০ টাকা কেজি ও আগাম জাতের নতুন আলু ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তাই ব্যাপক হারে আলু চাষ হচ্ছে। জেলায় এবারে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে আগাম জাতের আলু প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে রোপন করা হয়েছে। দুই হাজার হেক্টর জমির আলু ইতোমধ্যে কৃষক তুলতে শুরু করেছে। যিসেম্বর মাসের শেষ দিকে আগাম জাতের আলু উত্তোলন শেষ হয়ে যাবে। যে আলু উৎপাদনের পর ষ্টোরেজ করবে ও বীজ আলু হিসেবে সংরক্ষণ করবে সেই জাতের আলু কেবল মাত্র বীজ রোপন করেছে। তাই শীতের কারণে ব্লাইট বা নাভি পঁচা রোগের কারণে মূলউৎপাদনে প্রভাব পড়বে না।
ধরঅর চরের আলু চাষি একরামুল জানান, কুয়াশা কাটাতে ও ছত্রাক নাশক ঔষধ নিয়মিত স্প্রে করা হয়েছে আলু ক্ষেতে। এতে করে আগাম জাতের আলু চাষে খরচ বাড়ছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে যুদ্ধ করে আলুর মাঠ রক্ষা করে চলেছে মাঠের কৃষক। এই কৃশায়া টানা দুই সপ্তাহ চললে বিপাকে পড়তে হবে কৃষককে। সৌখিন কৃষক আলু চাষি জামাল উদ্দিন জানান, ১৮ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫-৫০ হাজার টাকা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে আলু বাজারে উঠবে। এখন যদি আলুতে পঁচন রোগ ধরে উৎপাদন ব্যহ্নত হবে। প্রকৃতির সাথে তো মানুষের হাত নেই। শীতের কারণে এমন টা হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলার কৃষি কর্মকার্তা মোঃ ড. মোঃ সাইফুল আরিফিন জানান, শীত ও কুয়াশার প্রকোপ থাকায় আলু ক্ষেতে নাভি ধসা রোগ বা নাভি পঁচা রোগ দেখা দিয়েছে। এটা ছত্রাকজর্নিত রোগ। মাঠপর্যায়ে ছত্রাকনাশক দমনের জন্য কৃষকদের স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছেন। শীতের কারণে আলুতে এমন রোগবালাই হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা। উন্নত কৃষিপ্রযুক্তিও ঔষধ ব্যবহারে সমস্যার সমাধান কৃষকের হাতের কাজে রয়েছে।

Discussion about this post