কুষ্টিয়া অফিস : কুষ্টিয়া সদরের হরিপুর ইউনিয়নে সরকারী আশ্রায়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। বর্ষাকালে নদীর পানি বেড়ে গেলে আশ্রায়ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসীরা।
উপজেলা পরিষদের বরাত দিয়ে জানা যায়, এই প্রকল্পের জন্য হরিপুর ইউনিয়নের বোয়ালদহ এলাকায় ৭২ হাজার ৭শত ২৭ টাকা শতক হিসাবে ৩২ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা। ক্রয়কৃত জমির প্রতি ২ শতাংশে ১টি পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি গৃহ নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫শ টাকা। এই প্রকল্পে ১৬ টি পরিবারের বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে আশ্রায়ন প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়- নিম্নমানের ইট, বালি, খোয়া দিয়ে গৃহ নির্মাণের কাজ চলছে। সেসময় বেশ কয়েকজন রাজমিস্ত্রীকে ইট দেখিয়ে গ্রেডিং জানতে চাওয়া হলে তার ইট গুলোকে সেকেন্ড, থার্ড, হাই সেকেন্ড এর মিশ্রণ বলে উল্লেখ করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, নদী তীরবর্তী এলাকায় আশ্রায়ন প্রকল্প নির্মাণের কাজ চলছে। নদীর পানি বৃদ্ধি হয়ে বন্যা হলে এইসব এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। তাছাড়া একেবারেই নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও তারা জানান। যেকোন সময় এসকল গৃহ ভেঙ্গে পরারও আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসীরা।
আশ্রায়ন প্রকল্প নির্মাণের জন্য জমি বিক্রেতা মজিবরের অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের ২ সদস্য জানান, এই জমির মালিক ৭ জন। ৩২ শতাংশ জমি ২৩ লক্ষ টাকার একটু উপরে বিক্রি করা হয়েছে। জমি বিক্রয়ের টাকা ৭ ভাগ করে ৭ জনের হাতে চেক তুলে দিয়ে ছবি তুলে রেখেছেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা।
বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাইদুর রহমান জানান, জমি ক্রয়ের বিষয়টি ইউএনও স্যার জানেন। তবে এই প্রকল্পে গৃহ নির্মাণ কাজের সাথে তিনি রয়েছেন। ভাটায় ইট সংকট, ভালো ইট পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া ইটের দাম এখন অনেক বেশি। তাই যে ইট পাওয়া যাচ্ছে তাই নেওয়া হচ্ছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গৃহ নির্মাণের সকল কাঁচামাল নিজস্ব সরবরাহকারীদের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস মুঠোফোনে জানান, জমি ক্রয়ের সময় স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ক্রয় করা হয়। সেসময় স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন এই জমি প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এই জমি ক্রয়ের সময় ছিলেন। তিনিও প্লাবিত হওয়ার সম্ভবনা নেই বলে জানিয়েছিলেন। তাছাড়া এই আশ্রায়ন এলাকায় বালি ফেলে উঁচু করা হবে বলেও জানান তিনি। নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহারের প্রসঙ্গে তিনি পিআইও’র সাথে কথা বলতে বলেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//