বিদ্রোহী হলেও বহিষ্কার হয়নি চরপাথরঘাটার দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী!
চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউপি নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা। তারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলেও তাদের বিষয়ে বহিষ্কার বা দলীয় সিদ্ধান্ত নেয়নি কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ।
জানা যায়, ১ নং (খ) চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী (চশমা) মনির আহমদ মার্শাল। যিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। অন্যজন উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য দাবিদার হাজী ছাবের আহমদ।
এদের মধ্যে গত ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন হাজী ছাবের আহমদ। তিনি দুবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। এবারে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা মনোনয়ন পেলেন কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম হক।
ওদিকে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নিলেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন বর্ধিত সভা ও তাঁদের বহিষ্কারের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের মনোনীত দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধারার ১১ উপ ধারা অনুযায়ি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন মার্শাল মনির ও হাজী ছাবের আহমদ। তাই নিজ নিজ পদ ও দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকে তাঁদের বহিষ্কার করার সুযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, প্রত্যেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। দলগতভাবে যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে মনোনয়নবঞ্চিত অন্য প্রার্থীরা একজোট হয়ে কাজ করেছে। কোথাও কোথাও স্থানীয় পর্যায়ে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন করা সম্ভব হয়নি।
আবার পছন্দমতো প্রার্থী না পেয়ে অনেক জায়গায় ভোট ভাগ হয়ে গেছে। আর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। ওই সব ভোটও বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে গিয়েছে। এসব কারণেই মূলত বিদ্রোহী প্রার্থীদের জয়ের পাল্লা ভারী হয়ে গেছে।
এমনকি বিএনপি নির্বাচনে প্রার্থী না দিলেও আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী সুবিধাজনক স্থানে আছেন এমন কথা বলা যাচ্ছে না।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাউকে কাউকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা সমর্থন দিচ্ছেন। এতে সংঘর্ষ-সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কা করছেন ভোটাররা। তবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন অফিস ও পুলিশ প্রশাসন।
ইসি জানান, নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকবে। কোনো প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে, আইনের ব্যত্যয় ঘটালে বা চেষ্টা করলে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রনির নাম্বারে একাধিক যোগাযোগ করা হলেও তাঁদের কেউ ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র সহ সভাপতি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তাদের মধ্যে যাদের দলীয় পদবী রয়েছে সেসব প্রার্থীকে দল থেকে অব্যাহতিসহ বহিষ্কারের সুপারিশ করা হবে নিশ্চয়।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মে ৩১,২০২২//

Discussion about this post