এনামুল হক : স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৬১নং আইনে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদের অযোগ্যতা বিষয়ক ২৬/১র (জ)উপধারায় বলা হয়েছে- “ কোন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার তারিখে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে কোন ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী রাখেন। তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত নিজস্ব বসবাসের নিমিত্ত গৃহ-নির্মাণ অথবা ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ ইহার আওতাভুক্ত হইবে না। আইন থাকলেও তার ব্যাত্যয় ঘটিয়েই সম্পন্ন হয়েছে কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার ৩নং তালবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থীতা যাচায় বাছায় প্রক্রিয়া। এমন লিখিত অভিযোগ জানিয়েও নির্বাচন কমিশন বা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালতয় হতে কোন প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর পক্ষ থেকে। প্রতিপক্ষ এই প্রার্থীর আরও অভিযোগ,ঋণ খেলাপী ও প্রার্থীর কাছ থেকে নিশ্চয় কোন বিশেষ সুবিধা হাসিলের বিনিময়েই নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অভিযোগে আমল দেননি। তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মিরপুর উপজেলার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার জামশেদ আলী জানান, “প্রার্থীদের দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র যাচায় বাছায়ের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযোগ না পাওয়ায় ওই ঋণখেলাপী প্রার্থীর প্রার্থীতা বৈধতা পেয়েছে।” তিনি বলেন গত ২০অক্টোবর মিরপুর উপজেলার ইউপি নির্বাচনে দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র যাচায় বাছায় সম্পন্ন হয়। এঘটনার প্রায় ১০দিন পর গত ০২ নভেম্বর অগ্রনী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার পক্ষ থেকে প্রেরিত একটি আপত্তি পত্র আমাদের হাতে এসে পৌছায়। ওই পত্রের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, ৩নং তালবাড়িয়া ইউনিয়নের ৩ওয়ার্ড নওদা গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত: জাকের আলীর ছেলে ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী মো: সুমন আহমেদের কাছ থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ও শ্রেনীকৃত অনাদায়ী ঋণ আদায়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। অগ্রনী ব্যাংক হতে প্রেরিত ওই অনাপত্তি পত্রে উল্লেখিত বিষয়ে এমুহুর্তে কার্যত: নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার নেই মর্মে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয় হতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।” অগ্রনী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখা হতে প্রেরিত ওই অভিযোগ পত্রের সূত্রে জানা যায় যে, ২০১৮ সালে ২৬ সেপ্টেম্বর অত্র ব্যাংক হতে মিরপুর উপজেলা ৩নং তালবাড়িয়া ইউনিয়নের ৩ওয়ার্ড নওদা গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত: জাকের আলীর ছেলে ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী মো: সুমন আহমেদ তার নিজ স্বত্ত্বাধীকারে পরিচালিত মেসার্স জাকের রাইচ মিলের অনুকুলে মঞ্জুরীকৃত সিসি লোন হিসেবে ১০লক্ষ টাকা বিতরণ করে ব্যাংকটি। যার পরিশোধে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ছিলো- ২০১৯সালে ০২ সেপ্টেম্বর। শর্তানুযায়ী নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে ঋণটি পরিশোধিত না হওয়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ ও শ্রেনীকৃত অনাদায়ী ঋণে পরিনত হয়েছে। যা নির্বাচনী বিধিমতে প্রার্থীতার অযোগ্যতা হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে এবিষয়ে অভিযুক্ত ওই ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী সুমন আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন, “ভাই গত দুই বছর করোনার কারনে লোনের কিস্তি শোধ করতে পারি নাইম, ব্যাংক যে চিঠি নির্বাচন অফিসে দিয়েছেন ওই বিষয়ে আমি ব্যাংকের সাথে কথা বলে সমঝোতা করে নেবো। আমি তো ওই টাকা মেরে খায়নি। পরিস্থিতির কারণে কিস্তি ফেল করেছি।”

Discussion about this post