Print Date & Time : 5 July 2025 Saturday 10:44 pm

ইসলামপুরে মেলার নামে চলছে অশ্লীলতা

রোমান আহমেদ, জামালপুর: জামালপুরের ইসলামপুরে ঈদ আনন্দ মেলার নামে চলছে রাতভর মাদকসেবন, জুয়া ও অশ্লীল নাচগান। এতে বিপথগামী হচ্ছে উঠতি বয়সী তরুণরা। এতে চরম বেঘাত ঘটছে আসন্ন এসএসসি পরিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে এলাকার সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।মেলার আয়োজকরা সরকার দলীয় এবং প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা কোন প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের হারগিলা বেড়িবাঁধ এলাকার কাজিরপাড়া বাজারের পশ্চিম পাশে চরের মধ্যে প্রায় ১০ একর জমিতে টিন দিয়ে আবদ্ধ করে চলছে মাসব্যাপী এই মেলা। নামে ঈদ আনন্দ মেলা হলেও কাজে এর কোনো ছিটেফোঁটা নেই। আনন্দের নামে উলঙ্গ নাচ, অশ্রাব্য গান, জুয়া ও মাদকসেবন। মেলায় তেমন কোনো দোকানপাটের পসরা না থাকলেও সার্কাস ঘরে অশ্লীল নাচ দেখতে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ও সাধারণ মানুষের কমতি নেই। সার্কাস মঞ্চ ও জুয়ার আসরে লোকজনের উপচে পড়া ভিড়। মঞ্চের অদূরে চলছে মাদক বেচাকেনা ও সেবন। সার্কাস ঘরের পাশেই হাউজির ঘর। পূবে র‌্যাফেল ড্র ও দক্ষিণে রয়েছে হাউজির মঞ্চ।

স্থানীয়রা জানায়, সরকার দলীয় কিছু নেতাকর্মী জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ঈদ আনন্দ মেলার আয়োজন করে। ১৫ মে থেকে শুরু হয় মেলা। উদ্বোধনের পরদিন থেকেই এ মেলায় চলছে মাদক সেবন, জুয়া ও অশ্লীল নাচগানের আসর।

এলাকাবাসী আরও জানিয়েছে, বিকেল থেকে ভোররাত পর্যন্ত চলে এই মেলা। এলাকার সরকার দলীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন এই মেলার আয়োজন করেছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক ঘটনা।

মেলাকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। এটি যেন মাদকের আখড়া হয়ে উঠেছে। এছাড়া মেলা থেকে উচ্চস্বরে বাজানো মাইকের শব্দে আসেপাশের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার চরম ব্যাঘাত ঘটছে। তাছাড়াও সামনে এসএসসি পরিক্ষা। উচ্চ শব্দে পরিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় বেঘাত ঘটছে। অসুস্থ লোকজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেলা আয়োজক কমিটির এক সদস্য বলেছেন, জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে এক মাসের জন্য ঈদ আনন্দ মেলার অনুমতি নেওয়া হয়েছে। মেলার পাশাপাশি লটারি, নাচগান, সার্কাসসহ হাউজিও চলছে। পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এসব চালাচ্ছি।

ইসলামপুর থানার ওসি মো. খুরশিদ আলম জানান, মেলার আয়োজক কমিটির কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে অশ্লীল নাচগান ও জুয়া না চালানোর জন্য। যদি এসব চলে তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. তানভীর হাসান রুমান জানিয়েছেন, ঘটনা শোনে মেলায় পুলিশ গিয়েছিল। আয়োজক কমিটির লোকজনের কাছ থেকে অশ্লীল নাচগান ও জুয়া না চালানোর মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি এসব চলে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিষয়ে পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ জানান, জেলা প্রশাসন যেসব শর্তে ঈদ আনন্দ মেলার অনুমতি দিয়েছে, তার একটিমাত্র শর্ত ভঙ্গ করলেই মেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

দৈনিক দেশতথ্য//এল//