মোঃ রাসেল, বরগুনাঃ বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তা ও ঈদ উপহার ইউক্রেনে নিহত নৌ প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের বাড়িতে গিয়েছিলেন মহিলা আসন-১৫‘র সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা। তিনি রবিবার (১ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টায় হাদীসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে গিয়ে উপহার ও বার্তা প্রদান করেছেন।
এ সময় বেতাগী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির, ব্যারিষ্টার হাছনা খাদিজা সবুর, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম পিন্টু,পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মো: জাবির হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান মো: খলিলুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আক্তার, সাধারণ সম্পাদক হাদীসুর রহমান পান্না সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নিহত ওই প্রকৌশলী ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’তে ছিলেন। রাশিয়া ওই জাহাজে রকেট হামলা করলে তিনি নিহত হন।
এমপি সুলতানা নাদিরাকে দেখে হাদিসুরের বৃদ্ধ পিতা মো. আব্দুর রাজ্জাক.মাতা রাশিদা বেগম ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স কান্নায় ভেঙ্গে পড়লে এ সময় তিনি শোকার্তদের সান্তনা দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার নিয়ে এসেছি। তাদের পরিবারের দু:খ ও কষ্ট লাঘবে প্রধানমন্ত্রীকে জানাবো।
এদিকে আনন্দ উচ্ছাস নিয়ে ঈদ-উল ফিতর আসলেও এবারে ঈদের আনন্দ নেই নিহত নৌ প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের পরিবারে। ঈদের আনন্দে সবাই যখন মাতোয়ারা তখন হাদিসুরের গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারিতে এখনও শোকে স্তব্ধ গোটা বাড়ি।
হাদিস নেই, সুনসান নিরব গোটা বাড়ি। থেমে থেমে ভেসে আসে আদরের ছেলে হারা এক মায়ের আহাজারি। কিছুতেই থামছেনা তার কান্না। দুই মাস আগে মারা যায় হাদিস। তবুও শোকের মাতম কমেনি। বরং ঈদের আগমনী যেন বেদনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুন। হাদিসকে ছাড়া যেন কোনো কিছু কল্পনা করা যেত না। আনন্দ উৎসবে সব কিছুতেই ছিল তার ছোঁয়া। এখন সেই পরিবারে ঈদুল ফিতরে নেই কোনো আনন্দ।
হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স জানান, প্রতি বছর ঈদ আসলে পরিবারের সবাইকে পছন্দের অনুযায়ী পোশাক কিনে দিতেন তিনি। এবার ঈদে বাড়িতে এসে বিয়ে করার কথা ছিল তার। এবার ঈদে সবাই আছে কিন্তু নেই শুধু তার ভাই। রমজান মাস চলে গিয়ে ঈদ আসছে এখন ভাই না থাকায় আনন্দ সব যেন মাটি হয়ে গেছে তাদের।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমাদের ঈদ আনন্দ হাদিসের সাথেই শেষ হয়ে গেছে। হাদিস ঈদে বাড়িতে আসলে আমাদের সবার জন্য কেনাকাটা করত। সবার সাথে একসাথে ঈদ করত। এবার ঈদে আমাকে আর কেউ কাপড় কিনে দিবে না। কেউ আর দোয়া চাইবে না।
হাদিসের মা আরও বলেন, হাদিসুরের কূলখানির আগে সাবেক মন্ত্রী বরগুনা-১ আসনের এমপি এডভাকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ১ লক্ষ টাকা, বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন এবং বরগুনার পুলিশ সুপার ১৫ হাজার টাকা করে দিয়েছিল। তবে ঈদ উপলক্ষে এখনও কেউ কোন সহযোগিতা করেননি। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে কিভাবে আমাদের ঈদ হবে সেই চিন্তাই করি এখন।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মে ১,২০২২//