পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীরা ভিসা ফি না দিয়ে বাংলাদেশে যেতে পারবে না। এমনই এক ফরমান জারী করেছে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এরজন্য কত টাকা গুণতে হবে তা এখনো নিশ্চিত হয় নি। এই ব্যবসাটি কে পেল তাও জানা যায়নি। তবে এই ফি ধার্য করা হয়েছে কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গবাসীদের জন্য। এ নিয়ে রাজ্য জুড়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।
এই সিদ্ধান্তের ফলে আউট সোর্সিং কোম্পানীর্ মাধ্যমে উপ-দূতাবাসে ভিসা আবেদন জমা হবে। এজন্য দিতে হবে নির্ধারিত প্রসেসিং ফি। এ ব্যাপারে উপ-হাই কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, সবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে প্রক্রিয়াটি কার্যকর হতে কিছুটা সময় লাগবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয়দের ক্ষেত্রে ভিসা ফি প্রত্যাহার করেছিলেন। হঠাৎ করে নেওয়া এই সিদ্ধান্তে পশ্চিবঙ্গের জনগণের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশের উপ-হাই কমিশনের একজন কর্মকর্তা দেশতথ্যকে বলেছেন, গত ২৭ জুন বাংলাদেশ স্বরা্ষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সেবা সুরক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি উপ-দূতাবাসে পৌঁছেছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বিদ্যমান আর্থিক বিধি বিধান প্রতিপালন সাপেক্ষ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, কলকাতার ভিসা সেবাপ্রদান কার্যক্রম আউট সোর্সিং-এর মাধ্যমে সম্পন্ন করার বি্যয়টি নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হলো।’ এই চিঠির ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
ওই আধিকারিক আরও জানান, এ্তে দুই লেয়ারে ভিসা ইস্যু প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। অর্থাৎ আউট সোর্সিং এজেন্ট ভিসা আবেদন প্রসেস করে উপ-হাই কমিশনের কন্স্যুলার উইংয়ে পাঠাবে। কন্স্যুলার উইং পুণরায় তা যাচাই করে দেখবে। এই কারণে ভিসা পেতে দুই দিনের স্থলে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লেগে যেতে পারে।
অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, হাই কমিশনের একটি বিশেষ মহল মতলবী চিন্তায় আউট সোর্সিং পদ্ধতি চালু করাচ্ছেন। এই ব্যাবস্থায় দালালদের দৌরাত্ব্য বাড়বে। ভারতীয়দের কাছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর্ অবদান খাটো হয়ে যেতে পারে। এই নিয়ম কার্যকর হলে পর্যটক সংখ্যা কমে যেতে পারে।
কলকাতার সিনিয়র সাংবাদিক স্বপন বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, এই রাজ্যের বিপুল সংখ্যক মানুষের পূর্বপুরুষদের জন্মভিটা বাংলাদেশে। তারা নাড়ীর টানে সেখানে ছুটে যায়। এই সংখ্যার মধ্যে ধনী গরীবের ভেদাভেদ নেই। এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যারা ভিসা ফি দিয়ে বাংলাদেশে যেতে পারবেন না। বাধ্য হয়ে তারা গলা ধাক্কা ব্যবস্থায় ফিরে যেতে পারে।
বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে পশ্চিমবঙ্গবাসীর সম্পর্ক ছিল আত্মীয়ের মতো। এই পদ্ধতি শেখ হাসিনার অবদানকে খাটো করে দিবে। উপ-হাই কমিশনের আগের ভিসা ব্যাবস্থাটি-তো খুবই ভালো ছিল। আবেদনের একদিনের মধ্যেই ভিসা পেয়েছি। পশ্চিমবঙ্গের জনগন যেন আগের নিয়মেই বাংলাদেশের ভিসা পায় সেই জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য কোলকাতাস্থ উপ-হাইকমিশনারকে কয়েকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

Discussion about this post