তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মহরম আলী (৫৫) ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
স্থানীয় সুধ কারবারিদের ভয়ে এবং ঋণের বোঝা সইতে না পেরে চাপের কারণে মুলত চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন বলে পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রের বরাতে নিশ্চিত করেছে।
মহরম আলী উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের চানগাঁও গ্রামের মৃত সোনা উল্যার ছেলে। তিনি স্থানীয় পীরের বাজারের একজন মুদি ব্যবসায়ী।
হাজীপুর ইউপি সদস্য রাজা মিয়া জানান, দীর্ঘদিন থেকে পীরের বাজারে মহরম আলীর মুদি দোকানের ব্যবসা ছিলো। ভালই চলছিলো তার সংসার। হঠাৎ করে তিনি ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি ঋণের চাপ সইতে না পেরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন।
নিহতের বড় ভাইয়ের স্ত্রী মালা বেগম জানান, নিহত ব্যবসায়ী মহরম আলী ২০ লাখ টাকার উপরে ঋণ আছে। স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীদের ঋণের চাপ সইতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যা করছেন।
ঘটনার দিন স্থানীয় কয়েকজন সুধ কারবারিদের (চড়া সুদের ব্যবসায়ী) টাকা পরিশোধের কথা ছিলো। টাকা পরিশোধ না করলে সুধ কারবারিরা অপমানজনক ব্যবহার করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, এলাকায় স্থানীয়ভাবে দাদন ব্যবসায়ীদের (সুদুড়ী) একটি শক্তিশালী চক্র গড়ে উঠেছে। যারা সামান্য সমস্যাগ্রস্থ মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে টাকা ঋণ দেয়। সেই টাকা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের টাকা বাড়তেই থাকে। এবার ঋণগ্রস্থ মানুষের সেই টাকা পরিশোধ করার আর ক্ষমতা থাকে না। ফলে কেউ কেউ ভিটেমাটি ছাড়তে হয় আবার কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসন কিংবা মেম্বার চেয়ারম্যানরাও এসব সুধকারবারিদের সমর্থণ করেন। ফলে সাধারণ ঋণগ্রস্থ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েন।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার এসআই দীপক সরকার তিনি বলেন, পরিবারের মাধ্যমে জানতে পারলাম মহরম আলী ঋণগ্রস্থ ছিলেন। এই চাপ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। লাশের পাশ থেকে একটি কীটনাশকের বোতল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।
উল্লেখ্য, ০৪ঠা মার্চ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় সিলেটগামী আন্ত:নগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনে শমশেরনগর রেলস্টেশনের পাশে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। ট্রেনে কাটা পড়ে ওই ব্যক্তির মাথাসহ দেহ কয়েক খন্ড হয়ে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়।

Discussion about this post