বিয়ের পোশাকে কনেকে এক পাল্লায় আর অন্য পাল্লায় রাখা হলো টাকার কয়েন। যৌতুক হিসেবে মেয়ের বিয়েতে তার সমপরিমাণ ওজনের টাকার কয়েন দিচ্ছেন পাত্রপক্ষকে।
ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের প্রাগপুর মাঠপাড়া গ্রামে।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে দেখা যায় কনের ওজনের সমপরিমাণ কয়েন যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয় পাত্রপক্ষকে। যদিও কনের পিতার দাবি মেয়ের জন্মের সময় মানত করা হয়েছিল এটি। যৌতুকের টাকা নয়, এটি পাত্রকে উপহারের টাকা।
যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হতেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মাঠপাড়া গ্রামের রতন আলীর মেয়ে মাছুরা খাতুনের সাথে একই গ্রামের মাইনুল ইসলামের ছেলে বিপ্লবের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন আগে তারা নিজেরা বিয়ে করেন। পরে উভয়পরিবারের সম্মতিতে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। তবে বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে সবার উপস্থিতিতে মেয়ের বাবা দাঁড়িপাল্লায় মেপে কনের সমপরিমাণ কয়েন (টাকা) ছেলেকে দেন।
মেয়ের পরিবার বিষয়টিকে ‘মানত’ দাবি করলেও অনেকেই এটি যৌতুক হিসেবেই দেখছেন।
এ ব্যাপারে পাত্রপক্ষের লোকজনের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে কনের বাবা রতন আলী বলেন, মেয়ের জন্মের সময় মানত করা হয়েছিল। মেয়ে বেঁচে থাকলে তার বিয়েতে তার ওজনের সমপরিমাণ টাকা উপঢৌকন দেব। তাই মেয়েকে দাঁড়িপাল্লায় মেপে কয়েন দেওয়া হয়েছে। এটি যৌতুকের টাকা নয় বলে দাবি করেন তিনি।
একই এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম বলেন, এভাবে প্রকাশ্যে ওজন করে টাকা দেওয়া ঠিক হয়নি। এটি যৌতুক না ‘মানত’, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। আর এ নিয়ে গ্রামে নানান কথা চলছে।
প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান মুকুল বলেন, ঘটনাটি আমিও শুনেছি। এই নিয়ে এলাকাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টির খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে তা আইনত অপরাধ। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ২৮ এপ্রিল ২০২৩

Discussion about this post