প্রাকৃতিক দুর্যোগে দফায় দফায় বিদ্ধস্ত খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের চরামুখা খালের গোড়ার উত্তর পার্শ্বের পাউবোর (পানি উন্নয়ন বোর্ড) দূর্বল বেড়িবাঁধটি ভেঙেচোরামুখা, ঘড়িলাল সহ সরদার পাড়া মিলিয়ে ৩ গ্রামে ঢুকছে জোয়ারের পানি। সর্বশেষ বৈরী আবহাওয়ায় এমন পরিস্থিতে বিস্তীর্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ।
এর আগে রোববার (১৭ জুলাই) ভোরে কপোতাক্ষ নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায়। এর পর ভোর ৪টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরামুখা এলাকায় দূর্বল বেড়ি বাঁধের প্রায় ২শ মিটার জায়গাজুড়ে ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায়। সকালে স্থানীয়রা সেচ্ছাশ্রমে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ মেরামতে চেষ্টা চালালেও দুপুরে জোয়ারের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে দ্রুত লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ইতোমধ্যে ৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ভাঙ্গনকবলিত এলাকায় বড় চর ছিল। রাতে ভাটির সময় চর এলাসহ ভাঙন শুরু হয়। সকালে স্থানীয়রা মিলে স্বেচ্ছায় বাঁধটি মেরামতের চেষ্টাকরেও ব্যার্থ হয়েছেন। ফলে দুপুরে জোয়ারে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি।
এব্যাপারে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য খোকন সরদার জানান, রাতে চরামুখা গ্রামের খালের গোড়ায় ২’শ মিটার জায়গা জুড়ে ভাঙ্গন শুরু হলে সকালে সেচ্ছাশ্রমে এলাকাবাসীরা মিলে মেরামতের কাজ করেছি। তবে পুরোটা জায়গা মেরামত করতে না পারায় দুপুরের জোয়ারে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে বলেও জানান তিনি।
সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড (১,২,৩) ইউপি সদস্য রশিদা খানম জানান, রাতে ভাটির সময় দূর্বল ওই বাঁধটি ভাঙলেও লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেনি। সকাল থেকে এলাকার জনগণ নিয়ে বাঁধ নির্মাণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। দুপুরে কপোতাক্ষের জোয়ারের উগরে দেওয়া পানিতে চোরামুখা, ঘড়িলাল সহ সরদারপাড়া মিলিয়ে তিনটা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে এমন পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে রাতে জোয়ারের সময় দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নে প্রবেশ করতে পারে বলেও দাবি করেন তিনি।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পুর) মো. মশিউল আবেদীন দেশতথ্যকে জানান, কয়রার ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি আগে থেকেই দূর্বল ছিল। সকালে বাঁধটি ভেঙে ক্লোজার তৈরি হয়েছে। তবে এই মূহুর্তে পানি আটকানোর মতো কিছু করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।
সর্বশেষ এমন পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী সহ উপজেলার সর্বোস্তরের জনগণ ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি মেরামত ও বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হওয়া থেকে রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুলাই ১৭,২০২২//

Discussion about this post