খুলনার কয়রায় নির্মম নির্য়াতনের শিকার হয়েছেন শামীমা নাসরিন (৩৭) নামের এক মহিলা। তার দু’ছেলের সামনে গাছে বেঁধে একদল দুর্বৃত্ত তাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে। সে এখন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বারান্দায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ১১ জুলাই (সোমবার) সকালে উপজেলার গিলাবাড়ি কুচির মোড় এলাকায়। তিনি ঐ এলাকার জনৈক গফ্ফার গাজীর মেয়ে ও আবুল কালাম সানার স্ত্রী।
শামিমা বাবার বাড়ির পাশে জমি কিনে দীর্ঘ দিন ধরে স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন। তার বাবা গফ্ফার গাজীর ২ বিঘা জমির উপর নজর পড়ে স্থানীয় লিয়াকত গাজী, সাখাওয়াত, নূর আলমসহ অন্যান্যদের। প্রায়ই তারা সংঘবদ্ধ হয়ে তাকে বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছিল।
সর্বশেষ ঈদের পরের দিন ১১ জুলাই (সোমবার) সকালে লিয়াকত গাজী দলবল নিয়ে শামীমার বাবার জমিতে জোর করে ঘর তৈরি করতে শুরু করে। শামীমা ও তার ভাবী সালমা খাতুন এতে বাঁধা দেয়।
এসময় খালেক ও আসফার গাজী শামীমাকে বাড়ি থেকে বের করে আনতে বলে। এরপর রফিকুল, সালাউদ্দিন, সাইফুল, সোয়েব তাকে টেনে-হেঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করে এনে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন শুরু করে।
তার ছেলে জাফর ও আহাদ গাজী অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে মায়ের নির্যাতন দেখতে বাধ্য হয়। তার ভগ্নিপতি রুস্তম গাজী ৯৯৯ এ ফোন দিলে কয়রা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
এসআই মাসুদ দড়ি খুলে শামীমাকে উদ্ধার করে কয়রা উপজেলার জায়গীর মহল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার অবস্থা আরও খারাপ হলে ওই দিনই তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেলের সার্জারী বিভাগের ৯/১০ বারান্দায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শামীমার স্বামী আবুল কালাম সানা বলেন, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। মোবাইলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বলেন, এর আগেও তারা এমন ঘটনা অনেক ঘটিয়েছে। এ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী সালিশীও করেছেন। এবিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।
ভিকটিমের ভগ্নিপতি রুস্তম গাজী বলেন, তার শ্বশুর ও শ্যালক নিরীহ প্রকৃতির মানুষ। লিয়াকত গং তাদের ২ বিঘা জামির দখল নিতে প্রায়ই তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এমনকি ঘটনার পরও তারা মোবাইলে বিভিন্ন সময় হুমকি দিচ্ছে।
মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী বলেন, জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে তাদের গোষ্ঠিগত বিরোধ চলে আসছে। ঘটনায় কয়েকবার সালিশ করা হলেও সমাধান না হওয়ায় এখন আর কেউ যায় না। ঘটনার সময় তিনি সেখানে ছিলেন না। খবর পেয়ে তিনি পুলিশকে অবহিত করেছিলেন।
কয়রা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এ.বি.এম.এস. দোহা বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুলাই ১৪,২০২২//