গোফরান পলাশ, কলাপাড়া: পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ইজারা বিহীন দু’টি পশুর হাটে অন্য হাটের রশিদ দিয়ে ইচ্ছেমতো আদায় করা হচ্ছে খাজনা।
জেলা প্রশাসনের অস্থায়ী পশুহাটের অনুমতি নিয়ে খাজনা রশিদে আদায়কৃত টাকার পরিমান না লিখে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে এভাবে মানুষকে জিম্মি করে খাজনা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। এনিয়ে রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতা সহ স্থানীয়দেরও ক্ষোভ।
জানা যায়, উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা বাজারে একই ইউনিয়নের বানাতীবাজারের খাজনা আদায়ের রশিদ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। বানাতীবাজারের ইজারাদার গোলাম সরোয়ার তনু এবং পরিচালনাকারী আকতার হেসেনসহ খাজনা আদায় করছে স্থানীয় ফরিদ বিশ্বাস, হোসেন খাঁ, মুসা বিশ্বাস, খোকা প্যাদা, শওকত প্যাদা, সৌরভ বিশ্বাস। এই হাটে মৌসুমী ফল-সবজি, হাঁস-মুরগী-কবুতর বিক্রেতার কাছ থেকে ১০০-১৫০ টাকা করে খাজনা আদায় করা হচ্ছে।
একই চিত্র নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজারে। সাপ্তাহিক হাট সোমবার ছাড়াও ক্রেতা চাহিদা বেশি থাকায় শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত টানা তিনদিন এ হাটে কলাপাড়া পৌরসভার পশু হাটের রশিদ দিয়ে খাজনা আদায় করা হয়েছে।
পশুর হাট পরিচালনা করছে স্থানীয় সবুজ মিয়া, সোহাগ মিয়া, আল-আমিন মিয়া। যারা তিনজনই নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল মিয়ার আপন ভাই।
মুক্তিযোদ্ধা বাজারের কোরবানীর পশু ক্রেতা-বিক্রেতা সহ স্থানীয়রা জানান, গরু প্রতি এ হাটে ক্রেতাকে খাজনা দিতে হয়েছে ১ হাজার টাকা, আর বিক্রেতাকে ৫শ’ টাকা। ছাগল প্রতি ক্রেতার কাছ থেকে ৫’শ এবং বিক্রেতার কাছ থেকে ২শ’ টাকা খাজনা আদায় করা হয়েছে। খাজনার টাকার রশিদ প্রদান করা হলেও রশিদে টাকার পরিমান লেখা হয়না। গড়ে এ বাজার থেকেই আদায় হয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা।
পাখিমারা বাজারে কোরবানীর পশু ক্রেতা-বিক্রেতাসহ স্থানীয়রা জানান, এ বাজারে গরু প্রতি ক্রেতার কাছ থেকে খাজনা আদায় করা হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২’শ টাকা। ছাগল প্রতি ৪’শ টাকা। এ হাটেও খাজনার টাকার রশিদ প্রদান করা হলেও খাজনা আদায় টাকার পরিমান লেখা হয়না। কোরবানীর পশু হাটকে কেন্দ্র করে এই বাজার থেকে খাজনা আদায় হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। খাজনা আদায়ে এই হাটে ক্রেতা বিক্রেতার সাথে অশোভন আচারনের অভিযোগ রয়েছে।
কলাপাড়া পৌর শহরের বাসিন্দা রিফাত জানান, পাখিমারা বাজার থেকে দুটি ছাগল ক্রয়ে তার কাছ থেকে খাজনা রাখা হয়েছে ৮’শ টাকা।
মুক্তিযোদ্ধা বাজারের খাজনা উত্তোলনকারী কালাম জানান, জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে আস্থায়ী বাজার পরিচালনা করা হচ্ছে। খাজনার হারও নির্ধারিত করা দেয়া হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের অনুমতির কাগজ দেখাতে পারেননি তিনি।
পাখিমারা বাজারের খাজনা আদায়কারী আকতার হোসেন জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে আস্থায়ী বাজার পরিচালনার কাগজ দেখান। তবে নানা অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলার অনুরোধ করেন।
কলাপাড়া ইউএনও মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে অস্থায়ীভাবে দু’টি হাট চলছে। অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুন ২৭,২০২৩//

Discussion about this post