হেলাল উদ্দিন (দৌলতপুর প্রতিনিধি):
গেল ৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের হয় ১৯ বছর বয়সী তরুণ নিরব হোসেন রাব্বী হত্যার অভিযোগে। এতে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অভিযোগ আসে অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে। পরে ২১ সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলার সোনাইকুন্ডী গ্রামে বিচার দাবির এক মানববন্ধনে স্বজনেরা নতুন করে দাবি তোলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করায় এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত ভাবে চালানো হয়েছে। কিন্তু তথ্য অনুসন্ধানে পাওয়া যাচ্ছে কিছুটা ভিন্ন খবর।
নিহত তরুণ রাব্বী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাঠে থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আন্দোলন করার কারণেই হত্যাকাণ্ড -এমন দাবি মিথ্যা বলেও জোর দাবি উঠেছে। দাবির পক্ষে মিলছে তথ্য-উপাত্তও। এ ঘটনায় প্রধান আসামি শোয়েব বিশ্বাসের পরিবারের দাবি, নিহত রাব্বীর সাথে তাদের পরিবারের কারো কোনো বিবাদ নেই। এমনকি পরিচয়ও নেই শোয়েব বিশ্বাস-মাহি বিশ্বাসের সাথে। তাছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথেও তাদের পরিবারের কোনো বিরোধ নেই। মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছে অভিযুক্তরা।
আত্মগোপনে থাকা অভিযুক্তদের পরিবারের লোকেরা আরও বলেন, শুনেছি সড়কে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হয়েছে রাব্বী। তা-ও সেটা অভিযুক্তদের এলাকা থেকে অন্তত ৩ কিলোমিটার দূরে।
অন্যদিকে, নিহত রাব্বীর স্বজনদের দাবি, রাব্বীকে সড়কে গতিরোধ করে তার ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
পরিচয় প্রকাশে আপত্তি রেখে ঘটনাস্থল সোনাইকুন্ডীর স্থানীয় এক কৃষক বলেন, ছেলেটি খুবই বেপরোয়া ভাবে হন্তদন্ত হয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলো, এক মোটরসাইকেলে তিনজন ছিলো। পরে শুনি আহত হয়েছে। কিভাবে হয়েছে স্থানীয়রা বলতে পারেননি। আশপাশে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরাও নেই। তাকে মোটরসাইকেল সহ রাস্তার পাশে থাকা একটি গাছের সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে থাকা অবস্থায় রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এলাকাবাসী উদ্ধার করেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন হোগলবাড়িয়ার একাধিক ব্যাক্তি মন্তব্য করেন, রাব্বী মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে নানা গ্রাম্য ষড়যন্ত্র চলছে, বিষয়টিকে রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারাও করছে কেউকেউ।
জানা গেছে, ৩০ আগস্ট বন্ধুদের সাথে সোনাইকুন্ডী গ্রামে পিকনিক করছিলো রাব্বী। পিকনিক স্থল থেকে সোনাইকুন্ডী-রায়টার পথে যেতে মানুষ তাকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ১৩ সেপ্টেম্বর।
স্থানীয় কলেজছাত্র রাব্বীর মৃত্যুর বিষয়ে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, যুবলীগ নেতা টোকেন চৌধুরীর অনুসারীদের এক গ্রুপ এবং আওয়ামীলীগ নেতা বাদশাহ্’র এক গ্রুপ পাশাপাশি পিকনিক করছিলো পিকনিকের এক পর্যায়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের জেরে গুরুতর আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন রাব্বীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত রয়েছে।
দৌলতপুর থানার ওসি মাহাবুবুর বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির মুখোমুখি করা হবে। নির্দোষ কেউ হয়রানি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে, এসময় রাব্বী মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ওসি।
টি//দৈনিক দেশতথ্য//২২ সেপ্টম্বর,২০২৪//

Discussion about this post