জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: আগুন নেভাতে পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৩৭ টি স্থানে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো ১৯৪ টি ফায়ার হাইড্রেন্ট কাজে আসছে না চট্টগ্রাম ওয়াসার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জনসংখ্যা এবং আয়তন বিবেচনায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বসানো হয়নি এসব ফায়ার হাইড্রেন্ট। রয়েছে নির্মাণ ত্রুটি। এজন্য এসব ফায়ার ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবহার করতে পারছে না ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’গুলোর মুখে পাইপ বসানোর সঠিক ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়নি। ফলে পাইপের মাধ্যমে পানি নেওয়া যাচ্ছে না। ত্রুটির কারণে ফায়ার সার্ভিস এগুলো গ্রহণ করেনি। ফলে এসব ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ কয়েক বছর আগে বসানো হলেও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
যদিও পুরকৌশল বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সয়েল প্রোফাইলের সিইও প্রকৌশলী রবিন খাস্তগীর বলেন, ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট বসছে তা ভালো উদ্যোগ। কারণ নগরীতে পুকুর-দিঘী এখন নেই বললেই চলে। তাই ফায়ার হাইড্রেন্টের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে আরো বাড়ানো উচিত। পাশাপাশি খেয়াল রাখা উচিত এগুলো যেন কার্যকর হয়।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খুরশিদ আলম বলেন, ‘বেশিরভাগ বিপণি কেন্দ্রের আশেপাশে পানি পাওয়া খুব কঠিন। পানির অভাবে আগুন নেভাতে দেরি হলে সর্বস্ব হারায় ব্যবসায়ীরা।’
নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, ‘হাইড্রেন্ট এলাকায় সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আমার বিবেচনায় আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, নিউমার্কেট, রিয়াজউদ্দিন বাজার, তামাকুমন্ডি লেন, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ এসব এলাকা এ মুহূর্তে অগ্রাধিকারে থাকা উচিত।’
ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, ‘ওয়াসা কোনো ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি। এগুলো যথাযথ প্রক্রিয়ায় বসানো হয়নি। কীভাবে বসাতে হবে তা আমরা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে বলেছি। কিন্তু তারা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এগুলো চালু করা গেলে পানির বিকল্প সোর্স আমাদের কাজে লাগত।’
কিন্তু ওয়াসা সূত্র জানায়, বিদেশি কনসালট্যান্টদের পরামর্শে ওয়াসার প্রকল্পের আওতায় নগরীতে এ পর্যন্ত ১৯৪টি ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো বসানোর আগে ফায়ার সার্ভিস থেকে মতামত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২০টির মতো ফায়ার সার্ভিসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে সূত্রটি দাবি করেছে।
এ বিষয়ে ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘অধিকাংশ ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ ব্যবহারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিগুলো এখনো কমিশনিং না হওয়ায় হস্তান্তর করা হয়নি।’ চট্টগ্রাম মহানগরীর ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে জনসংখ্যা এবং আয়তন বিবেচনায় ৩৭টি ওয়ার্ডে বসানো হয়েছে এসব ফায়ার হাইড্রেন্ট।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//